‘এই জয় নিয়ে বলার মতো ভাষা আমি পাচ্ছি না।’, শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার অনুভূতিটা অধিনায়ক লিটন দাস জানালেন এই কথা বলেই। ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে ইংরেজিতে যা বলেছেন, বাংলায় সেটা ভাবানুবাদের পর কথার আবেদনটা কিঞ্চিত কমলেও কমতে পারে। তবে এটা নিশ্চিত, লিটনরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে, যে দাপট দেখিয়ে সিরিজ জিতেছেন, তাতে তার আবেদন বাড়বে বৈ, কমবে না এতটুকুও।
১-০ তে পিছিয়ে পড়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জেতার পর লিটন বললেন ক্রিকেট নিয়ে নিজের আর দেশের মানুষের বড় স্বপ্নের কথা। যে স্বপ্নের পথে লিটনের সাথী নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা। কী সেই বড় স্বপ্ন, লিটন খোলাসা করেননি। কিন্তু সেটা যে বৈশ্বিক মঞ্চের বড় কোনো শিরোপা, এতটুকু হলফ করে বলে দেয়াই যায়।
টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে লিটন দেশের বাইরে প্রথম সিরিজ জিতেছেন ২০২৪ সালের শেষদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তবুও কেন এই সিরিজ জয় আলাদা লিটনের কাছে? উত্তর খুঁজতে অবশ্য খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। টি-টোয়েন্টির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কিংবা শ্রীলংকা সফরে টেস্ট আর ওয়ানডে সিরিজের ফলাফলের দিকে চোখ রাখলেই বুঝা যাবে, লিটন কেন ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পরে।
বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অঘোষিত ফাইনালে পরিণত হওয়া সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। শেখ মাহেদীর স্পিন জাদুতে শ্রীলংকাকে ১৩২ রানে আটকে দেয়ার পর তানজিদ তামিমের ৪৭ বলে ৭৩* রানের ইনিংসে রচিত হয় ইতিহাস। শ্রীলংকাকে হেসেখেলে হারানোর এই সিরিজে ১১৪ রান করে সেরা ক্রিকেটার হয়েছেন লিটন।
তাই একগাদা পুরস্কার আর প্রাইজমানি বগলদাবা করার আগে ডাক পড়ল ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে। সেখানেই মাইক্রোফোন হাতে সিরিজ জয়ের অনুভূতি ব্যক্ত করলেন এভাবে, ‘এই জয় নিয়ে বলার মতো ভাষা আমি পাচ্ছি না। আমাদের দল যেভাবে খেলেছে, অধিনায়ক হিসেবে আমি খুশি, এই দলের ছেলেদের নিয়ে আমি গর্বিত। প্রথম টি-টোয়েন্টিটা ভালো খেলিনি, কিন্তু শেষ দুটো ম্যাচে আমরা আসলেই অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। দলের আসল চেহারা এটাই।’
দেশ কিংবা দেশের বাইরে মিলিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে এর আগে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। সাফল্য বলতে ছিল শুরু চারটি ম্যাচ জয়। এবার বদলে গেল হিসেব, কাটল সিরিজ জয়ের খরা। তাই এই জয়ের মাহাত্ম্য তুলে ধরতে গিয়ে লিটন টেনে আনলেন দেশের মানুষের স্বপ্নের কথা।
অতীতের ব্যর্থতা ঘোচানোর তৃপ্তি নিয়ে লিটন বলেন, ‘এই সিরিজ জয়টা বাংলাদেশের জন্য খুব বড় একটা অর্জন। যখনই এর আগে শ্রীলংকা এসেছি, খুব বেশি ম্যাচ জিততে পারিনি। কিন্তু এই জয়টা আমাদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নেবে। আমাদের জন্য, নতুন প্রজন্মের জন্যও দারুণ একটা অর্জন। কারণ বাংলাদেশি হিসেবে, বাংলাদেশি ভক্ত হিসেবে আমাদের বড় স্বপ্ন আছে।’
লিটনদের স্বপ্ন জয়ের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে নিকট ভবিষ্যতে। সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এশিয়া কাপ। এরপর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত আর শ্রীলংকা মিলিয়ে মাঠে গড়াবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগামী আসর। এই বড় দুই আসরে ভালো করতে, শ্রীলংকায় সিরিজ জয় নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস যোগাবে বাংলাদেশকে!