ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ‘খুবই ইতিবাচক’ আলোচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ক্রেমলিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটি ছিল ‘খুবই ইতিবাচক’ আলোচনা, যা উভয় দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথ খুঁজে পেতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও জানান, এই আলোচনা উভয় দেশকে ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে’ সহায়তা করবে।
বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে বৈঠক শেষে পেসকভ সংবাদমাধ্যমে বলেন, দুই নেতা তাদের ‘পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য’ দিয়েছেন, তাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের প্রয়োজন ছিল না। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠক শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

পেসকভ আরও উল্লেখ করেন, এই আলোচনা কেবল ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতির জন্যই নয়, বরং বিশ্বের সামগ্রিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সহায়ক হতে পারে।
এদিকে, পুতিনের এই সফরকে কেন্দ্র করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি টেলিগ্রামে একটি পোস্টে পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের দ্বৈত নীতির বিষয়ে মন্তব্য করেন।
তার মতে, ‘পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম এখন এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছে, যা উন্মাদনা বলা যায়, প্রায় পাগলামির কাছাকাছি।’ তিনি আরও বলেন, তিন বছর ধরে রাশিয়াকে একঘরে হওয়ার প্রচার চালানো হলেও আজ তারা পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে লালগালিচা সংবর্ধনা পেতে দেখছে।
এটি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের দ্বৈত নীতির উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন জাখারোভা। তিনি যোগ করেন, ‘তারা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করার প্রচার করেছে, কিন্তু এখন সেই রাশিয়াকেই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সংবর্ধিত করতে দেখছে।’
এ ধরনের দ্বৈত নীতির বিরুদ্ধে রাশিয়া একধাপ এগিয়ে বলেছে, এই ধরনের আচরণ পশ্চিমা মিডিয়ার একরকম পাগলামি এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা।
এর আগে আলাস্কায় প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘চুক্তি হয়নি, তবে আমরা এগিয়েছি।’
ওই বৈঠকে পুতিন জানান, তিনি আন্তরিকভাবে সংঘাতের অবসান চান। তবে বিস্তারিত কোনো প্রস্তাব দেননি। বৈঠকের পর দুই প্রেসিডেন্ট গণমাধ্যমের প্রশ্ন নেননি।
ট্রাম্প পরে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘চুক্তি করুন!’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকেই যেকোনো সমঝোতায় সম্মতি দিতে হবে। ‘হয়তো তারা না বলবে,’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আলাস্কার অ্যানকরেজে পৌঁছেই ট্রাম্প ও পুতিন উষ্ণ অভ্যর্থনায় হাত মেলান এবং একসঙ্গে ট্রাম্পের লিমুজিনে চড়ে বৈঠকস্থলে যান।