সিলেটের ভোলাগঞ্জে নির্বিচারে সাদা পাথর লুটের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর একেএম নূরুন নবী এ রিট করেন।
তিনি বলেন, ‘সিলেটের সাদা পাথর এলাকা একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বড়, মাঝারি কিংবা ছোট পাথরের মধ্য দিয়ে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট জলধারাই ছিল এই পর্যটনকেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ। গত চারমাস ধরে সেখানে প্রকাশ্যে লুট হয়েছে ছোট-বড় সব পাথর।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে প্রকাশ্যে চলছে এই লুটপাট। যা শুধু প্রাকৃতিক সম্পদ নয় বরং পর্যটন শিল্পকেও ফেলেছে হুমকির মুখে ।

রিটে এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনেরও দাবি জানানো হয়।
এছাড়াও পাথর লুটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা ও তার ব্যাখ্যা চেয়েও একটি রুল জারির কথা বলা হয়েছে রিটে।

সেইসঙ্গে লুটের ঘটনা তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও এতে বিবাদী করা হয়েছে পরিবেশ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), সিলেট জেলা প্রশাসক, কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)সহ ১০ জনকে।
এদিকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ সাদা পাথর উদ্ধারে বৃহস্পতিবার রাতভর যৌথবাহিনী বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে, যেখানে শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি করা হয়।
ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর এলাকায় নজিরবিহীন লুটপাটের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে জেলা প্রশাসন এই ব্যবস্থা নিল। চুরি হওয়া পাথর আগের স্থানে ফেরত আনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, যৌথবাহিনী বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত ভোলাগঞ্জ সড়কের প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়ে শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি চালায়। জাফলং, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কেও রাতভর একই ধরনের অভিযান পরিচালিত হয়।
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাঁচ দফা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে– ভোলাগঞ্জ ও জাফলং এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী মোতায়েন, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে স্থায়ী পুলিশ চেকপোস্ট, অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, পাথর চুরিতে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুরি হওয়া পাথর আগের স্থানে ফেরত আনা।