বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই মুহূর্তে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। তার মতে, এই পদ্ধতি আরও ২০ থেকে ৩০ বছর পর বাস্তবসম্মত হতে পারে।
সোমবার দুপুরে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, `বাংলাদেশের জনগণ পিআর পদ্ধতি ঠিকভাবে বোঝে না। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় পিআর পদ্ধতি কোথাও জানে না, এমনকি ভারতের মানুষও এটি বোঝে না। দেশের মানুষ যদি শতভাগ শিক্ষিত হয়, তবেই এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।’
যে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে সেটিকে বিপ্লব নয় বরং গণঅভ্যুত্থান হিসেবে চিহ্নিত করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘বিপ্লব ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ছিল, আর ৫ আগস্ট হয়েছে একটি গণঅভ্যুত্থান। এটি কোনও বিপ্লব নয়।’
যারা এককভাবে আন্দোলন সফল করার দাবি করেন এবং গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান তাদের সমালোচনা করেন বরকত উল্লাহ।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই কোটা আন্দোলনের নেতারা হোম মিনিস্টারের বাসায়, আইনমন্ত্রীর বাসায়, বিভিন্ন মন্ত্রীর বাসায় এমনকি শেষ পর্যন্ত তারা হারুনের হোটেলের বাবা-মা নিয়ে তারা একটু খানা খেয়েছেন। সেখানেই ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে পাঁচ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানটি সংঘটিত হয়ে গেল।’
১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের যৌথ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘জামায়াত যদি সেদিন এই আন্দোলনটি না করত, আওয়ামী লীগের সঙ্গে না যেত তাহলে আওয়ামী লীগ কিন্তু ৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে না এবং বাংলাদেশের জন্য এত দুর্ভাগ্য আসে না।’
‘আমরা দেখতে পেলাম, আওয়ামী লীগের অনেক লুটেরা আজ জামায়াতের সদস্য হয়ে আবার শপথ নিয়ে ফিরে এসেছেন, তারা এখন জামাতের রুকন।’
সংস্কারের কথা বলে সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে একটি অংশ জাতিকে বিভক্ত করতে চায় এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান আরও তিন বছর আগে ২০২২ সালে ৩১ দফা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছেন। এ ৩১ দফা জাতির মুক্তি সনদ। ৩১ দফায় এমন কোনও দাবি নেই যেটা সংস্কারের বাইরে থাকে। এই ৩১ দফা হচ্ছে জাতির মূল মুক্তির সংস্কারের সনদ।’
৩১ দফাকে দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার একমাত্র নির্ভরযোগ্য রূপরেখা হিসেবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘যদি সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে এটি বাস্তবায়ন করতে পারে, তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হবে এবং দেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।’