দিদারের জন্য শোকার্ত নিউইয়র্ক

3 Min Read
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি) কর্মকর্তা দিদারুল ইসলামের মৃত্যুতে সেখানে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছবি: এপি/ইউএনবি
Highlights
  • পারিবারিক বন্ধু মারজানুল করিম বলেন, ‘দিদার একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন। স্কুলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ দিয়ে শুরু করে পরে তিনি যোগ দেন পুলিশ বিভাগে।’

নিউইয়র্ক সিটির একটি উঁচু অফিস টাওয়ারে সোমবার বিকালে এক বন্দুকধারীর গুলিতে চারজন নিহত হন। প্রথমেই প্রাণ হারান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি) কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। এ ঘটনায় পুরো নিউইয়র্কজুড়ে তো বটেই, বিশেষ করে সেখানের বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

দিদারুল ইসলাম (৩৬) নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে তিন বছর ছয় মাস ধরে কর্মরত ছিলেন। দুই সন্তানের জনক দিদারুলের স্ত্রী এখন গর্ভবতী, তাদের তৃতীয় সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার অপেক্ষায়।

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, পার্কচেস্টার এলাকায় দিদারের নিজ বাসভবনে সোমবার রাতেই বন্ধু, আত্মীয় ও বাঙালি কমিউনিটির শুভাকাঙ্ক্ষীরা ভিড় করেন। কেউ রান্না করা খাবার নিয়ে এসেছেন পরিবারটিকে সহমর্মিতা জানাতে। রাত ১টা পর্যন্ত ছিল লোকসমাগম।

নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস দিদারুলকে ‘নিউইয়র্কবাসীর রক্ষক’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তিনি জীবনের বিনিময়ে মানুষকে রক্ষা করেছেন। তিনি কেবল পোশাকে নয়, হৃদয়ে-মনেও একজন সত্যিকারের নিউইয়র্কবাসী।’

পুলিশ জানায়, শেন তামুরা নামে এক বন্দুকধারী লাস ভেগাস থেকে গাড়ি চালিয়ে এসে নিউইয়র্কে সোমবার পার্ক অ্যাভিনিউয়ের ভবনে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। ভবনের লবিতে ও ওপরে ওঠার পর চারজনকে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা করেন। তার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়।

নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ (এনওয়াইপিডি) কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

দিদারের বাসার ভাড়াটিয়া শোয়েব চৌধুরী বলেন, ‘তিনি ছিলেন খুবই প্রাণবন্ত। সকালেই তার সঙ্গে দেখা হলো, আর সন্ধ্যায় জানলাম তিনি মারা গেছেন!

‘এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না,’ যোগ করেন তিনি।

পারিবারিক বন্ধু মারজানুল করিম বলেন, ‘দিদার একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন। স্কুলে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ দিয়ে শুরু করে পরে তিনি যোগ দেন পুলিশ বিভাগে।’

আরেক বন্ধু করিম বলেন, ‘আমার মা তাকে একবার বলেছিল, “তুমি তো নিরাপদ চাকরি ছেড়ে দিলে, পুলিশ হওয়া তো ঝুঁকিপূর্ণ।’

দিদার তখন বলেছিলেন, ‘আমি আমার পরিবারের জন্য একটি গর্বের উদারণ হতে চাই।’

নামাজের সময়ের পরে স্থানীয় মানুষ, প্রতিবেশী, মসজিদের ইমাম সবাই তার বাসায় এসে শ্রদ্ধা জানান। প্রতিবেশী মো. শাহজাদা বলেন, ‘দিদার হজ করে ফেরার পর আমাকে একটি জায়নামাজ উপহার দিয়েছিলেন। সেটি আজ স্মৃতি হয়ে রইলো।’

নিহতের ছোট শ্যালক সালমান আহমেদ (২১) বলেন, ‘আমরা কখনো ভাবিনি এমন কিছু ঘটতে পারে। দিদার নিজের কাজ নিয়েই থাকতেন।’

মারজানুল করিম বলেন, ‘অনেকে দিদারের কাছে জানতে ঘরে-বাইরে এতো কাজ তুমি কীভাবে করো? সে বলত, ‘শুধু কমিউনিটিকে সেবা দাও, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *