আইসিসির এলিট প্যানেলের একমাত্র বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। স্থানীয় ক্রিকেট থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে চূড়ায় পৌঁছেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। কিন্তু ম্যাচ রেফারিদের তালিকায় চোখ বুলালে সাবেক ক্রিকেটার রকিবুল হাসান ও নিয়ামুর রশিদ রাহুল ছাড়া কারো নাম সেভাবে খুঁজে পাওয়া যায় না। যদিও তারা কেউই আইসিসির ম্যাচ অফিসিয়ালদের এলিট প্যানেল ভুক্ত নন। কেবল মাত্র ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলোতেই নিয়মিত এই দুজন।
সেই অভাব ঘুচানোর লক্ষ্যে ২৬ ও ২৭ জুলাই মিলে দুইদিনব্যাপী ম্যাচ রেফারিদের বিশেষ এক কর্মশালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবি মিডিয়া সেন্টারের ডাইনিং লাউঞ্জে ম্যাচ রেফারিংয়ের কোর্সের ওপর আয়োজিত এই কর্মশালায় যোগ দেন গেম ডেভেলপমেন্টের ইনচার্জ হাবিবুল বাশার সুমন, নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকও।
এছাড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার ফজলে মাহমুদ রাব্বি, নারী দলের সাবেক অধিনায়ক রুমানা আহমেদও অংশ নেন এই কোর্সে। এলিট প্যানেলের আম্পায়ার সৈকতও উপস্থিত ছিলেন এই কর্মশালায়। বিসিবির চিফ ম্যাচ রেফারি রকিবুল হাসানের সমন্বয়ে শেষ হয়ে কর্মশালার প্রথমদিন। সব মিলিয়ে সাবেক ও বর্তমান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয় বিসিবির মিডিয়া প্লাজা।
ম্যাচ রেফারিংয়েই কেন আসতে চান? এই প্রশ্নের জবাবে এশিয়া কাপ জয়ী নারী ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ টাইমস অফ বাংলাদেশ’কে বলেন, ‘কেন না? এটা অবশ্যই অনেক সম্মানজনক একটা কাজ। ক্রিকেটটাকে আমি ভালোবাসি, সবসময়ই বলি। ক্রিকেটটা আমি একেবারেই ছেড়ে দিতে চাই না। যার জন্য আগে আমি একটা আম্পায়ারিং কোর্সটা করেছি, এখন ম্যাচ রেফারিংয়ের কোর্স করার একটা সুযোগ এসেছে, তাই এটাও করছি। সব মিলিয়ে আমার ক্রিকেটের সাথে থাকারই ইচ্ছা।’

ক্রিকেট ক্যারিয়ার এখনো শেষ হয়নি রুমানার। যদিও জাতীয় দলে রীতিমতো ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন এই লেগ স্পিনার। তবুও ক্যারিয়ার শেষ না করে ম্যাচ রেফারিংয়ের দায়িত্ব নিতে চান না তিনি।
পাঁচ বছর পর নিজেকে ম্যাচ রেফারি বা আম্পায়ার রূপে দেখেন কি না, প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের হয়ে ৫০ ওয়ানডে ও ৮৭ টি-টোয়েন্টি খেলা এই নারী ক্রিকেটার বলেন, ‘আসলে আম্পায়ারিং অনেক টাফ জব। আমি আম্পায়ারিংয়ের একটা কোর্স কমপ্লিট করেছি ঠিকই, কিন্তু এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। যেহেতু আমি এখনো খেলার মধ্যে আছি। আমি চাচ্ছিলাম খেলা শেষ করে সবকিছু নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে। কমপ্লিকেটেড করব না কিছু, যেটা আমার কাছে ইজি হবে সেটাই করব।’
অবশ্য সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন এই কোর্সটাকে নিচ্ছেন নতুন কিছু শেখার মাধ্যম হিসেবে। কাজ করেছেন নির্বাচক প্যানেলে, বর্তমানে বিসিবিতে আছেন গেম ডেভেলপমেন্টের ইনচার্জ হিসেবে। ম্যাচ রেফারিদের কাজ কী, সেটা গভীত থেকে জানাই তার মূল উদ্দেশ্যে। টাইমস অফ বাংলাদেশ-কে সুমন বলেন, ‘এই কোর্স করা মানেই তো ম্যাচ রেফারি হয়ে যাওয়া না। নতুন কিছু শিখলাম,নতুন নলেজ গ্যাদার করলাম। আমি এঞ্জয় করছি। আমি সবসময়ই কিছু না কিছু শিখতে চাই। ম্যাচ রেফারিদের কাজ কী হয়, না হয় শিখলাম।’
সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবির বর্তমান নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক অবশ্য, এই কোর্সকে বেশ সিরিয়াসলিই নিচ্ছেন। টাইমস অফ বাংলাদেশের সাথে আলাপকালে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকলে তাকে ম্যাচ রেফারি হিসেবেও দেখা যেতে পারে অদূর ভবিষ্যতে।
সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার বলেন, ‘ওরকম সুবিধা থাকলে অবশ্যই ইনভলভ না হওয়ার কারণ নেই। আমরা ক্রিকেটেরই মানুষ, ক্রিকেটের মধ্যেই থাকার ইচ্ছা আছে। আসলে যেহেতু এই সেক্টরে কাজ করলে, প্রত্যেকটা জিনিস নিয়ে ভালো আইডিয়া থাকা দরকার, যারা যারা কাজ করে সবার। এটাও একটা বড় ব্যাপার, আমার জানার ইচ্ছা আছে, শেখার ইচ্ছা আছে।’