খাগড়াছড়িতে এক কিশোরীকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ উঠেছে। তিন সপ্তাহ আগের (২৭ জুন) এই ধর্ষণের ঘটনা আলোচনায় আসার পর দু’দিন ধরে পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থী ও সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরা।
জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জনসংহতি সমিতির সমর্থনপুষ্ট সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন। এছাড়াও ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর সাত সংগঠন এবং নৃ-গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংগঠন ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করেছেন।
এসব সমাবেশে বক্তারা আসামিদের একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের লোকজন দাবি করে ধর্ষণকাণ্ডের দ্রুত বিচার চান। সমাবেশ থেকে পাহাড়ী জনপদে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়।
সতর্ক করে বক্তারা বলেন, ধর্ষক যে দলেরই হোক না কেন, ধর্ষণের মতো অপরাধের বিচার না হলে দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাবে।
এদিকে, নৃ-গোষ্ঠীর ওই কিশোরীর বাবা বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে এ ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরপরই রাত ৩টার দিকে ধর্ষণের অভিযোগে চার জনকে গ্রেপ্তার করে খাগড়াছড়ি পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫) ও এনায়েত হোসেন (৩৫) এবং শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২)। মামলার বাকি দুই আসামি হলেন একটি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মুনির ইসলাম (২৯) ও ছাত্রদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল ইসলাম (২৩)। তারা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয়রা আসামীদের বিএনপি’র লোক বলে জানালেও, খাগড়াছড়ি উপজেলা বিএনপির দাবি- জড়িতদের কেউ বর্তমানে বিএনপি’র কর্মী নন।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই ঘটনার পর কিশোরী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে, তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকেই পরিবারের সদস্যরা ‘ধর্ষণ’-এর বিষয়ে জানতে পারেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২৭ জুন রথযাত্রার মেলা শেষে বাসায় যেতে চেয়েছিলেন ওই কিশোরী। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে যান। সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে অভিযুক্ত ছয়জন তাকে ধর্ষণ করে। এসময় কিশোরীর আত্মীয়কে বেঁধে রাখা হয়েছিল। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে এ ঘটনা ঘটলেও সামাজিক লজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে ভুক্তভোগী প্রথমে পরিবারকে কিছু জানায়নি।