সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ শেখ মাহেদী কাটিয়েছেন সাইড বেঞ্চে বসে। বুধবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টির একাদশজে জায়গা মিলল মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে। কী দারুণভাবেই না সুযোগটা কাজে লাগালেন এই অফ স্পিনার। ৪ ওভার বলে করে ডটই দিয়েছেন ১৭টা! মাত্র ১১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রাতে শেষটায় এলোমেলো বল করেছেন শরীফুল ইসলাম। ইনিংসের শেষ ওভারে এই বাঁহাতি পেসার ২২ রান না দিলে ৭ উইকেট হারানো শ্রীলংকা ১৩২ পর্যন্ত যেতে পারত কিনা সংশয় আছে।
অথচ টসে জিতে ব্যাট করতে নামা শ্রীলংকার শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ইনিংসের প্রথম বলে দারুণ এক স্কয়ার কাটে শরীফুলকে চার মেরে রানের খাতা খোলেন পাথুম নিসাঙ্কা। দুই বল পর আরো একটা চার মারেন কুশাল মেন্ডিস। অবশ্য ১৪ রানের সেই ওভারের শেষ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
এরপরের গল্পটা একাই লিখেছেন মাহেদী। নিজের প্রথম ওভারে বল করতে এসেই পান সাফল্য। অফ স্টাম্পের বাইরে তার জোরের ওপর করা বলে ডিফেন্সিভ শট খেলতে গিয়ে স্লিপে তানজিদ তামিমের হাতে ক্যাচ দেন কুশাল পেরেরা। তিন বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফেরা দীনেশ চান্দিমালও মাহেদীকে স্লগ করতে গিয়ে টপ এজে ক্যাচ তোলেন জাকের আলীর হাতে। লংকান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা মাহেদীর লেংথে করা বলে বোল্ড হয়েছেন কিছু বুঝে ওঠার আগেই। এর আগে ঠিক কতটা চাপে ছিল শ্রীলংকা? ছোট্ট একটা উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হবে।
ইনিংসের চতুর্থ বলের পর বাউন্ডারির দেখা পেতে শ্রীলংকাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো ৩৫ বল। অবশ্য নিসাঙ্কার ব্যাটে সেই চাপ সামলে ওঠার চেষ্টা করলেও মাহেদীর শেষ ওভারে উল্টো আরো চাপে পড়ে লঙ্কানরা। ৩৯ বলে ৪৬ রান করে মাহেদীর হাতে ফিরতি ক্যাচ দেন নিসাঙ্কা। পার্ট টাইমার শামীম হোসেনও দিয়েছেন ব্রেক থ্রু, সিরিজে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা কামিন্দু মেন্ডিসকে ফিরিয়ে। রিভার্স সুইপের চেষ্টায় পয়েন্টে ধরা পড়েন তানজিম সাকিবের হাতে।
ডেথ ওভার শুরুর আগে শ্রীলংকার সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১০১ রান। টানা দুই ওভারে লংকানদের আরো চেপে ধরেন মোস্তাফিজ। পেয়েছেন কেবল জেফ্রি ভ্যান্ডারসের উইকেট, তবে বল হাতে ছিলেন দারুণ কিপটে। ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৭ রান।
তবে শেষে শরীফুল বল হাতে যা করেছেন, তা সম্ভবত কেউই আশা করেননি। অন্তত মাহেদীর অমন দুর্দান্ত বোলিং স্পেলের পর। দাসুন শানাকার সামনে করলেন অসহায় আত্মসমর্পণ। দুই ছক্কা, দুই চারে আর এক্সট্রা মিলিয়ে দিয়েছেন ২২ রান। এর মধ্যে শানাকার মারা দ্বিতীয় ছক্কাটায় বল চলে যায় প্রেমাদাসার ছাদে। সব মিলিয়ে ইনিংসের সবচেয়ে খরুচে ওভার করা শরীফুল ৪ ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান।