পাহাড় ও সমতলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল ৬টার দিকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ২২ মিটার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়, যা স্বাভাবিক প্রবাহের (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) চেয়ে ৭ সেন্টিমিটার বেশি। এর আগে ১২ আগস্ট সন্ধ্যা ৬ টায় পানি বিপদসীমার ২ সেন্টিমটার নিচে ছিল। ১২ ঘন্টার ব্যবধানে ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। এদিকে পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা অববাহিকার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ডালিয়া পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তাতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, তিস্তার পানি বাড়াতে নীলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, পাটগ্রাম, কালিগঞ্জ এবং আদিতমারীর নদী-তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তিস্তায় ঘন ঘোলাপানি চরাঞ্চলে বাড়িঘরের চারপাশে প্রবেশ করেছে। তলিয়ে গেছে চরের সড়ক। ওইসব এলাকার ফসলি জমিগুলো ডুবে গেছে।
এ ছাড়া তিস্তা ব্যারেজের ভাটির দিকে এ নদীর দিক পরিবর্তনে নীলফামারীর বাইশপুকুর মৌজা এলাকার তুহিন ক্রস বাঁধটি ভাঙ্গনেরও আশংকা করা হচ্ছে। এটি বিধ্বস্ত হলে সেখানকার অন্তত চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হতে পারে। স্থানীয়রা বাঁধ রক্ষার্থে বাঁশ ও কাঠের গুড়ি এবং বালির বস্তা ফেলছেন।
তিস্তাপাড়ের মানুষজন জানান, ভারতের সীমানা পেরিয়ে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। তাই নদীর উজানে বন্যা দেখা দিলে তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ে। সারারাত এবং সকালেও তিস্তা অববাহিকায় বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ঢল ও বৃষ্টির কারণে চরাঞ্চলের পরিবারগুলো উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। বড় বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন চরবাসী।