বাংলাদেশে গাজার ছাত্রীদের বৃত্তি ইস্যুতে ফিলিস্তিন দূতাবাসের ব্যাখ্যা

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দূতাবাস। বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ফিলিস্তিনি নাগরিকদের প্রতি উদার সহায়তা অব্যাহত রেখেছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর জন্য  “ভিসা অন অ্যারাইভাল” সুবিধা ও দেশের ২০টিরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২৮০টি পূর্ণাঙ্গ বৃত্তি।’

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এএইউডব্লিউ)-এ গাজা থেকে আগত নারী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রসঙ্গে দূতাবাসের অবস্থান ‘বিকৃতভাবে’উপস্থাপিত হয়েছে বলেও দাবি ফিলিস্তিন দূতাবাসের।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দূতাবাস মাত্র ‘দুই ডজন’ বৃত্তি নিশ্চিত করেছে, যা সঠিক নয়। দূতাবাসের দাবি, বাস্তবে তারা ২০০টিরও বেশি বৃত্তি নিশ্চিত করেছে। এ ছাড়া দূতাবাসের কারণে বিলম্বে ৩০ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে—এমন অভিযোগও ভিত্তিহীন। এই ৩০ জন শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় এএইউডব্লিউ থেকে সরে গিয়ে দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় বিকল্প বৃত্তি গ্রহণ করেছেন।

ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ফিলিস্তিন সরকারের মূল লক্ষ্য ও নীতি হলো গাজার মানুষের জাতিগত নির্মূল এবং গণহত্যা প্রতিরোধ করা। গাজার একটি খালি এলাকা থেকে শুধু ইসরায়েল ও তার মিত্ররা উপকৃত হয়। আর এটি ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রীয় অধিকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।’

দূতাবাস আরও জানায়, বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের, বিশেষত নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই তাদের অগ্রাধিকার। অতীতে এএইউডব্লিউ-তে আফগানিস্তানের এক শিক্ষার্থী ও লাওসের এক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) যে এএইউডব্লিউকে সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে—প্রতিবেদনে এমন ইঙ্গিত থাকলেও, সরকারি সূত্রে নিশ্চিত হয়েছে যে আরব আমিরাতের সহায়তা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক ভিত্তিতে ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়।

বর্তমানে আরব আমিরাত আর এ ধরনের সহায়তা দেবে না, যা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রসত্তার বিপরীতে যায় বলেও দূতাবাস জানিয়েছে।

এ বিষয়ে দূতাবাস স্পষ্ট করেছে, গাজার নারী শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে পড়াশোনার জন্য অন্য যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আগ্রহী এবং এ ধরনের ভর্তি প্রক্রিয়ায় দূতাবাসের কোনো আপত্তি নেই।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন এবং আরও শিক্ষার্থী আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গাজার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে দূতাবাস জানিয়েছে, বর্তমানে ২২ লাখের বেশি মানুষ অবরুদ্ধ অবস্থায় বোমাবর্ষণ, জোরপূর্বক উচ্ছেদ ও অনাহারের শিকার।

ইসরায়েল ও তার মিত্ররা গাজাকে জনশূন্য করে তথাকথিত ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর পরিকল্পনা করছে, যা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রসত্তাকে বিপন্ন করবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *