আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে যুবদলের সাবেক নেতা আসিফ শিকদারের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তার স্ত্রী। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্ত্রী মেঘলা এই দাবি জানান।
এ সময় স্বামীর মৃত্যুর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আহ্বানও জানান তিনি।
ঘটনার দিনের কথা বর্ণনা করে মেঘলা বলেন, ‘২১ জুলাই আনুমানিক রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে যৌথবাহিনীর লোকজন বাসায় আসে। আসিফকে একটি রুমের ভেতর আটকে রেখে আড়াই ঘণ্টা নির্যাতন চালানো হয়।’
মেঘলার অভিযোগ, নির্যাতনের পর তার স্বামীকে ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। একপর্যায়ে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে নিয়ে যায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে মেঘলা বলেন, ‘পরবর্তীতে আসিফের পরিবার সেনাক্যাম্পে গেলে জানানো হয়, আসিফকে শাহ আলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
‘এরপর থানায় গেলে দেখা যায়, আসিফ মুমূর্ষু অবস্থায় বারান্দায় পড়ে আছে। অবস্থার অবনতি হলে তড়িঘড়ি করে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
আসিফের পরিবারের অভিযোগ, যৌথবাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের কারণে আসিফ মারা গেছেন।
ডিসি (মিডিয়া) তালেবুর রহমান এ বিষয়ে টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘আসিফকে শাহ আলী থানায় আনা হয়েছিল এবং সেখান থেকে পুলিশই তাকে হসপিটালে নিয়ে যায়। হাসপাতালেই আসিফের মৃত্যু হয়।’
এ ছাড়া এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানান তালেবুর।
মেঘলা টাইমস অব বাংলাদেশকে জানান, ‘অভিযানে আসা যৌথবাহিনী আসিফের বাসায় অবৈধ কিছু পায়নি। তারপরও তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে টাইমস অব বাংলাদেশ পুলিশের বক্তব্য জানতে মিরপুর জোনের উপপুলিশ-কমিশনার মাকছুদুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো জবাব মেলেনি।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ জাকারিয়াও এই অভিযোগের ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি।
আসিফের স্ত্রী বলেন, ‘আসিফ হত্যা শুধু একটি বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ডই নয়, এটি আদর্শিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের চেতনা ও মানবাধিকারের প্রতি চরম অবহেলার বর্হিঃপ্রকাশ।’
এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ফ্যাসিবাদের আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বলেও উল্লেখ করেন মেঘলা।
২৩ জুলাই রাজধানীর শাহ আলী থানা হাজতে যুবদল নেতা আসিফ সিকদারের মৃত্যুর ঘটনায় মিরপুরের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাকসুদুর রহমান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম, মেজর মুদাব্বিরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।