পাহাড়ে ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের একাংশ বাঙালি বসতিস্থাপনকারী, আর তাদের ‘দায়মুক্তির সংস্কৃতি’ সেখানের অপরাধকে উৎসাহিত করছে, এমন অভিযোগ করেছেন চাকমা রাজা (সার্কেল চিফ), ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।
শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের তীব্র নিন্দা ও বিচারের জোর দাবি জানান।
এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে, ত্রিপুরা স্কুল ছাত্রী ধর্ষনের ওই ঘটনায় অভিযুক্তরা স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা।
খাগড়াছড়ির ধর্ষণের বিচার দাবি করে শুক্রবারই রাঙামাটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিভিন্ন পাহাড়ি সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।

বিবৃতিতে রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এর খাগড়াছড়ি জেলার লতিবান এলাকায় এক ত্রিপুরা আদিবাসী কিশোরীর উপর সাম্প্রতিককালে সংঘটিত বর্বর ও পৈশাচিক ধর্ষণের ঘটনায় আমি গভীর ক্ষোভ ও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটি বাঙালি বসতিস্থাপনকারী যুবক দল কর্তৃক সংঘটিত হয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের আদিবাসী কন্যাশিশু ও নারীদের ওপর অ-আদিবাসী পুরুষদের দ্বারা বিগত কয়েক দশক ধরে সংঘটিত ধর্ষণ ও অন্যান্য সহিংসতার ধারাবাহিকতায় এই ঘটনা নতুন নয়। পূর্ববর্তী এই ধরণের অনেক ঘটনার বিচার না হওয়ার কিংবা অপরাধীদের এক ধরণের দায়মুক্তি সংস্কৃতির নজির রয়েছে, যা এই ধরনের অপরাধকে উৎসাহিত করেছে।’
ব্যারিস্টার দেবাশীষ বলেন, ‘এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও কঠোর আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। এর সাথে ভুক্তভোগী কিশোরী ও তার পরিবারের জন্য যথাযথ চিকিৎসা, মনোসামাজিক সহায়তা, আইনি সহায়তা, নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাই।’
‘দেশের নাগরিকদের ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হয়রানি বা হস্তক্ষেপ বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি,’ যোগ করেন চাকমা রাজা।

২৭ জুন রাতে অষ্টম শ্রেণির এক পাহাড়ি ছাত্রী ভাইবোনছড়া বাজার এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। পরে ভুক্তভোগী মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
বুধবার মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে মামলা করলে রাতেই পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত হচ্ছেন– ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরমান হোসেন (৩২), সদস্য ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫) এবং শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন (৩২)। মামলার অপর আসামিরা হলেন– ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনির ইসলাম (২৯) এবং ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল ইসলাম (২৩)।