বান্ধবী নিয়ে ‘হাসিহাসি’র অভিযোগ ওঠায় ক্ষমা চেয়েও রেহাই পাননি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান পারভেজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই বহিরাগত কিশোর গ্যাং ডেকে আনলে ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর বনানীতে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ঘটে ওই হত্যাকাণ্ড। নিহত পারভেজ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকার বিরুনিয়া ইউনিয়ন। তার বাবা জসিম উদ্দিন।
শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থী অভিযোগ তোলেন, ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময় পারভেজ তাদের দুই বান্ধবীকে নিয়ে ‘হাসাহাসি’ করেছেন। এ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী প্রক্টোরের কাছে অভিযোগও করেন। পারভেজ নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও প্রক্টোরের বিচার মেনে ছাত্রী দুজনের কাছে ক্ষমাও চান তিনি। কিন্তু এতেও ঘটনার নিষ্পত্তি হয়নি।
অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মেহরাজ ইসলাম, মাহাথীর হাসান পিয়াস ও আবু জহর বেপারির সঙ্গে তার প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ক্যাম্পসের বাইরে থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ডেকে এনে পারভেজের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে খুন হন তিনি।
পারভেজের এমন মৃত্যুতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার সহপাঠীরা। তারা ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘বহিরাগত কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া পথে পারভেজের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তার বুকে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’
ওসি জানান, শনিবার রাতেই নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জন আসামি রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্য বিশ্লেষণ করে মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
নিহতের চাচাত ভাই দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পারভেজ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ কারণে রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ নেওয়া হয় পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাজা। পরে মরদেহ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হবে গ্রামের বাড়িতে।