ঈদের দিন উৎসবের আবহ ছিল কারাগারেও। ঈদের নামাজ, বিশেষ খাবার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা মিলিয়ে স্বাভাবিক জীবনের চেয়েও বেশি আনন্দ মিলেছে কারাবন্দিদের।
দেশের ৭১টি কারাগারে থাকা ৭৩ হাজারের বেশি কারাবন্দি শনিবারের দিনটি পার করেছেন ভিন্নমাত্রায়। দেশের সব কারাগারে নানা অনুষ্ঠানের কথা জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
ঈদ উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ খাবার, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কারাবন্দি সংগীতশিল্পী মইনুল আহসান নোবেল। তিনি মঞ্চে উঠে গান গেয়ে মাতিয়ে তোলেন বন্দিদের।

ঈদের দিন শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বন্দিশালার মাঠে আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে নোবেল গেয়ে শোনান ‘অভিনয়’, ‘ভিগি ভিগি’, ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হয়ে গেলে’সহ জনপ্রিয় কয়েকটি গান। অন্য শিল্পীদের গান শুনে বন্দিরা আবেগ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন। তৈরি হয় ভিন্নরকম উৎসবমুখর পরিবেশ।

কারা অধিদফতরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, ‘প্রতিটি কারাগারে আমরা চেষ্টা করি ঈদের দিনে বন্দিদের জন্য একটু ভিন্ন কিছু করার। ঈদের দিনে বিশেষ খাবারের আয়োজন থাকে। পাশাপাশি বন্দিদের পরিবার পক্ষ থেকে বাসার খাবার পাঠালে সেটাও বন্দিদের দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা ঈদের দিনে এলে তাদের জন্য দেখা করার সুযোগ সহজ করে দেওয়া হয়।’
‘আমরা চাই, বন্দিরা ঈদের দিনটিকে ভিন্নভাবে উপভোগ করুক। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতিটি কারাগারে ঈদের দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বন্দিরাই নিজেদের মধ্যে গান, কবিতা, নাটক পরিবেশন করেন। এতে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ভালো প্রভাব পড়ে।’

কারা অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, দেশের মোট ৭১টি কারাগারে প্রায় ৭৩ হাজার কারাবন্দি রয়েছেন। ঢাকা বিভাগে পাঁচটি কেন্দ্রীয়সহ ১৮টি কারাগারে ২৫ হাজার ৩৭৩ জন বন্দি রয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে এ ধরনের আয়োজন প্রতিবছরই করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও এবার ছিল কোরআন তেলাওয়াত, আজান প্রতিযোগিতা, সীরাত কুইজ এবং ফুটবল খেলার মতো নানা আয়োজন।