‘জেতা নয়, ভবিষ্যৎ গড়া’— সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নিয়ে বললেন বাটলার, আত্মবিশ্বাসে টইটম্বুর অধিনায়ক আফিদা।
১১ জুলাই মাঠে গড়াচ্ছে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। আজকের প্রেস কনফারেন্সে চার দলের কোচ ও অধিনায়কেরা অংশ নেন। বাংলাদেশের হয়ে কথা বলেন কোচ পিটার বাটলার ও অধিনায়ক আফিদা খন্দকার। যেখানে উঠে এসেছে শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের জাতীয় দল গড়ার।
সিনিয়র, অনূর্ধ্ব-২০ ও অনূর্ধ্ব-১৭—তিনটি পর্যায়ের দল একসঙ্গে সামলাচ্ছেন বাটলার। ফলে তার প্রস্তুতিও ছিল ব্যস্ত। তবে তিনি জানালেন, ‘মিয়ানমার থেকে ফেরার পর খেলোয়াড়দের মাটিতে রাখার কাজ করেছি। বিনয়ী থাকার শিক্ষা দিচ্ছি, যেন শৃঙ্খলার সাথে তারা মাঠে নামতে পারে। এ টুর্নামেন্ট আমাদের কাছে তরুণদের যাচাইয়ের মঞ্চ।’
খেলোয়াড় তৈরির বড় সুযোগ হিসেবে সাফকে দেখছেন কোচ, ‘তরুণদের নিজেকে প্রমাণ করার জায়গা এই টুর্নামেন্ট। সহজ হবে না, সকল প্রতিপক্ষকে আমরা শ্রদ্ধা করি, হালকাভাবে নিচ্ছি না।’
বাটলার সাফ জানিয়ে দেন, ‘আমি যেখানে থাকি, আত্মতুষ্টি সেখানে থাকে না। খেলোয়াড়দের প্রতিনিয়ত শেখাই কিভাবে পা মাটিতে রাখতে হয়। কারণ দলের সেরাটা বের করে আনতে হলে সবার আসলে অন্যদের সম্মান করে খেলে যেতে হবে, নাহয় দলের মানসিকতা নষ্ট হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই টুর্নামেন্ট জয়ের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা দেওয়া। যেন পরের ধাপে—সিনিয়র দলে—তারা প্রস্তুত থাকে। আমরা ফল নয়, ভবিষ্যৎ দেখছি।’
নেপালে এই টুর্নামেন্টে কেবলমাত্র জুনিয়রদের সুযোগ দিচ্ছে, সিনিয়রদের একদমই রাখে নি তাদের স্কোয়াডে এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে বাটলার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা তাদের ব্যাপার। আমি অনূর্ধ্ব-১৭ থেকে অনেককেই খেলাতে চেয়েছিলাম এই টুর্নামেন্টে তবে নিয়মের মারপ্যাঁচে তো তাদের এই অনূর্ধ্ব-২০ দলে খেলাতে পারছি না। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের খেলতে বাধা না থাকলেও সমস্যা চলে আসে জুনিয়রদের ক্ষেত্রে। আর নেপালের স্কোয়াড সিলেকশনের ব্যাপারটা আসলে তাদের পরিকল্পনার অংশ। আমি আমার দল নিয়ে খুশি আছি’।
যেহেতু এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের পাহাড়ি নায়িকা ঋতুপর্ণা খেলছেন তাই স্বভাবতই প্রশ্ন জাগতে পারে যে বাটলারের দলের মূলচালিকা শক্তি কে হবেন এই দলে। এর জবাবে বাটলার বলেন ‘আমি আসলে কোনো একজনকে নিয়ে কাজ করি না বরং আমি কাজ করি পুরো দল নিয়ে। আমি কোনো একজন নিয়ে কথা বললে অবশ্যই বাকিদের উপর সেটা ভাল ফল নিয়ে আসবে না। হয়তো এখান থেকেই আমরা নতুন ঋতুপর্ণা পেয়ে যাব।’
বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার আজকের সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে খেলে এসেছি, প্রস্তুতির সময় কম ছিল। কিন্তু যেটুকু সময় পেয়েছি, সেটিকে কাজে লাগিয়েছি। আজকেও অনুশীলন করেছি, সবাই একসাথে। আলহামদুলিল্লাহ সব ভালই ছিলো’
প্রতিপক্ষদের হালকাভাবে না নেওয়ার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘তিনটা দলই শক্তিশালী। কাউকে ছোট করে দেখছি না। ইনশাআল্লাহ আমরা প্রতিটি ম্যাচে জয়ের জন্য খেলবো।’
অনেকে সাফকে ছোট প্রতিযোগিতা বলে ভাবতে পারেন। তবে আফিদার জবাব একদম স্পষ্ট—’আমাদের স্বপ্ন ছিল সাফ জিতে এশিয়ান কাপে যাওয়া। আমরা সেটা করেছি। তাই সাফকে ছোট করে দেখার প্রশ্নই ওঠে না। দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে এই টুর্নামেন্টে আমাদের পুরো মনোযোগ। সাফ আমাদের শিকড়, এটা ফেলে দেওয়া যায় না।’