সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী চলতি সপ্তাহে অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর উদ্ধার ও পরিবেশ রক্ষায় ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনায় সেনাবাহিনীরও অংশ নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের সূত্রের বরাত দিয়ে ইউএনবি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার অভিযানকালে প্রায় ১৩০টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। এর মধ্যে ৭০টি ট্রাকে থাকা প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট সাদা পাথর জব্দ করা হয়।
এর আগে, বুধবার সাদাপাথর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছিল। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুন্নাহার জানান, জব্দকৃত পাথর রাতে সাদাপাথরে পুনঃস্থাপন করা হয়েছে।
জব্দ হওয়া পাথরের বড় অংশ ধলাই নদীতে ফেরত পাঠানোর কাজ চলছে। জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এতে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ ও পরিবেশ পুনরুদ্ধারে সাহায্য হবে।’ অভিযান চলাকালীন রাতের মধ্যেই পাথর লুটের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য পৃথক অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, ‘প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা ও পরিবেশ বাঁচাতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, মজুদ বা পাচারে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
সম্প্রতি সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনার পর জেলা প্রশাসন গত মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। পদ্মাসন সিংহকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিকে ১৭ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সিলেটের ভোলাগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে ধলাই নদের কাছে প্রায় ১৫ একর এলাকাজুড়ে সাদা পাথরের অবস্থান। প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য ঘিরে গড়ে উঠেছে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রও।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রকাশ্যে নির্বিচারে লুট হয় ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় শত শত নৌকা দিয়ে চলে এই লুটপাট।
সিলেট জেলা প্রশাসন জানায়, গত এক সপ্তাহেই এলাকাটির প্রায় ৮০ শতাংশ সাদাপাথর তুলে নেওয়া হয়েছে, যার মূল্য কয়েক’শ কোটি টাকা।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কেবল পাথরই নয়, ধলাই নদীর তীরের বালু ও মাটিও খুঁড়ে নেওয়া হয়েছে। সাদাপাথর অঞ্চল এখন বিরানভূমি।