আন্তর্জাতিক আইন ব্যর্থ এবং ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চলছেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ।
ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসন ও গণহত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের উদ্যোগে শনিবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ এ কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের ব্যর্থতাকে সামনে এনে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক আদালত কিংবা মানবাধিকার কনভেনশন থাকার পরেও বাস্তবে কোনো কার্যকারিতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল প্রকাশ্যে জাতিসংঘের প্রস্তাব ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায় অমান্য করছে। ন্যূনতম মানবিকতাবোধ সম্পন্ন যেকোনো মানুষের পক্ষেই নিরপরাধ শিশু, নারী ও ক্ষুধার্ত মানুষের ওপর বোমা হামলা ও গুলি করে হত্যার ঘটনা সহ্য করা কঠিন।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ঘোষণা করেছে। সেই আদালতের রায় অনুযায়ী নেতানিয়াহু যেখানেই যাবেন সেখানেই তার গ্রেপ্তার হওয়ার কথা, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তার বিচার হওয়ার কথা কিন্তু তার কিছুই হচ্ছে না।’
তিনি দাবি করেন, ইসরায়েল প্রশাসনিকভাবে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা বিশ্বব্যাপী সবাইকে জানিয়ে তারপরে গাজা দখল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
‘আমরা আগেই এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম, তাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গাজা দখল করা, ট্রাম্পের অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তার দিকে তাকিয়ে আছে। তার মানে শুধুমাত্র ফিলিস্তিন দখল করার তাদের যে পরিকল্পনা সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তারা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে, যোগ করেন তিনি।
আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা এমন একটা বিশ্ব ব্যবস্থায় বাস করি যেটিকে বিশ্বব্যবস্থা বলা যায় না। সারা বিশ্বজুড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা মাস্তান বা সন্ত্রাসী ভূমিকা আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
বক্তারা অভিযোগ করেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধ নয়, বরং ‘পরিকল্পিত আগ্রাসন’ চালানো হচ্ছে। তারা বলেন, ‘জাতিসংঘের রেসকিউ অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত হামলার শিকার হচ্ছে, অথচ বিশ্ব সম্প্রদায় কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
আনু মুহাম্মদ দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতাতেই ইসরায়েলের পক্ষে এই আগ্রাসন চালানো সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যরা, যাদের বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব, তারাই অস্ত্র উৎপাদন ও রপ্তানিতে সবার থেকে এগিয়ে এবং পৃথিবীতে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির জন্য দায়ী।’
এ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কামরুজ্জামান, আব্দুস সাত্তার, জুলফিকার আহমেদসহ ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের অন্যান্য সদস্যরা।