সিলেটের ভোলাগঞ্জে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ সাদা পাথর উদ্ধারে বৃহস্পতিবার রাতভর যৌথবাহিনী বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়েছে, যেখানে শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি করা হয়।
ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর এলাকায় নজিরবিহীন লুটপাটের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে জেলা প্রশাসন এই ব্যবস্থা নিল। চুরি হওয়া পাথর আগের স্থানে ফেরত আনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, যৌথবাহিনী বৃহস্পতিবার ভোররাত পর্যন্ত ভোলাগঞ্জ সড়কের প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসিয়ে শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক থামিয়ে তল্লাশি চালায়। জাফলং, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন সড়কেও রাতভর একই ধরনের অভিযান পরিচালিত হয়।

ট্রাক চালক ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি পাথরের উৎস ও আমদানির প্রমাণপত্র যাচাই করা হয়। বৈধ কাগজপত্র পাওয়া গেলে ট্রাকগুলোকে যেতে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরকার মামুনুর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, দেড় থেকে দুইশ ট্রাক পরীক্ষা করা হয়েছে এবং অবৈধ প্রমাণিত হলে সেগুলো জব্দ করা হবে।
তবে কিছু চালক অভিযোগ করেছেন, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও হয়রানি করা হচ্ছে; তাদের দাবি, প্রশাসনের উচিত হবে অবৈধ ক্রাশার মিলে অভিযান চালানো।

যৌথবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘শহরের দিকে যাওয়া সব পাথরবোঝাই ট্রাক আটক করে ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে যাচাই করা হচ্ছে।’
এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পাঁচ দফা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এরমধ্যে রয়েছে– ভোলাগঞ্জ ও জাফলং এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী মোতায়েন, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে স্থায়ী পুলিশ চেকপোস্ট, অবৈধ ক্রাশিং মেশিনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, পাথর চুরিতে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং চুরি হওয়া পাথর আগের স্থানে ফেরত আনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে প্রতিদিন শতাধিক নৌকায় পাথর পাচার হচ্ছে। তারা বলছেন, লাগামহীন লুটপাটে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র তার পুরনো সৌন্দর্য হারাচ্ছে এবং এলাকাবাসীর জীবিকা পড়েছে হুমকির মুখে।