গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে হামলার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্ক এলাকায় সমাবেশস্থলে তিনি এ ঘোষণা দেন। এদিন দুপুর ২টার দিকে গোপালগঞ্জ সদরে সমাবেশ মঞ্চে এসে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
নাহিদ বলেন, ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি ও দেশ গড়ার আহ্বান জানাতে গোপালগঞ্জে এসেছি। মুজিববাদ ও সন্ত্রাসীদের হাত থেকে এই জেলাকে মুক্ত করতে হবে।’
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণ ও হামলা করে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আমাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে তওবা করার সুযোগ দিয়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন করতে চাইলে মানুষ ছেড়ে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘মুজিবাদ ও মুজিববাদী সংবিধান দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। তাই মুজিববাদীর সংবিধানের কবর রচনা করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায় বলেন, ‘গোপালগঞ্জ থেকেই মুজিববাদের কবর রচনা হবে, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করা হবে। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল, এই দলের কথা শুনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করবেন না।’
নাহিদ বলেন, ‘যদি কোনো বাধা না থাকত, গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষ ঢল নামত এখানে। আমরা গোপালগঞ্জের নাম পাল্টাতে আসিনি। আমরা এসেছি শান্তির প্রতিশ্রুতি নিয়ে, নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে।’
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, যদি ওরা (হাসিনা সরকার) বাধা দেয়, তবে লড়াই তীব্র হবে। সেই লড়াই জিততেই হবে। গোপালগঞ্জের লোকজন আমাদের বাধা দিয়েছে। আর আমরা সেই লড়াই জিতব। আমরা জবাব দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের আশ্রয়স্থল হতে পারে না। যদি পুলিশ প্রশাসন তোমাদের, গোপালগঞ্জকে কিংবা বাংলাদেশকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমাদের দায়িত্ব হবে সেই রক্ষা করা—যেমনটা আমরা করেছি গণঅভ্যুত্থানের সময়।’
নাহিদ দৃঢ়ভাবে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না। মুজিববাদীরা মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে, গোপালগঞ্জকেও করেছে। কারা ওদের আশ্রয় দিয়েছে, তা দ্রুত তদন্ত করতে হবে। না হলে আমরা আবার ফিরে আসব, নিজেদের হাতে গোপালগঞ্জকে মুজিববাদীদের কবল থেকে মুক্ত করব।’
এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এই হামলা গোপালগঞ্জের মানুষের কণ্ঠ রোধ করতে পারবে না। আমরা বলি, আমরা সহিংস নই। বাংলাদেশের মানুষ তোমাদের তওবার সুযোগ দিয়েছে। তওবা করো এবং সাধারণ মানুষের কাতারে এসে দাঁড়াও।’
গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গোপালগঞ্জ এখনো বাংলাদেশের অংশ হয়ে ওঠেনি। আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে গোপালগঞ্জকে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গোপালগঞ্জের মানুষকে দমন-পীড়ন থেকে মুক্ত করেছি। আমরা তোমাদের সঙ্গে মিলেই ন্যায়ের বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করছি।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা যদি এখান থেকে বেঁচে ফিরি, তবে মুজিববাদের পতন নিশ্চিত করেই ফিরব। অন্যথায় ফিরব না।’
তিনি আরও লেখেন, ‘ঘাতকরা, হাসিনার দোসররা গোপালগঞ্জে আমাদের ওপর হামলা করেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাটক দেখেছে, পিছিয়ে গেছে।’