মাঠে না খেলতে পারার আক্ষেপই শক্তি হয়ে উঠেছিল: সাগরিকা

টাইমস স্পোর্টস
3 Min Read
নেপালের জালে একাই ৪ গোল দিয়ে নিজের ক্ষুধা মেটালেন সাগরিকা। ছবি: বাফুফে

সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালের বিপক্ষে ৪-০ গোলের দাপুটে জয়ে শিরোপা নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে একাই চার গোল করে নায়িকায় পরিণত হন সাগরিকা। মাঠে ফিরেই জ্বলে ওঠা এই স্ট্রাইকার ম্যাচ শেষে জানান, লাল কার্ডের কারণে মাঠের বাইরে থাকা সময়টা তাকে ক্ষুধার্ত করেছিল, আর সেই জেদ থেকেই এসেছে গোলের পর গোল।

ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন সাগরিকা। তার পাশে ছিলেন কোচ পিটার বাটলার এবং অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার। শিরোপা জয়ে মূল ভূমিকায় থাকা এই তরুণী জানান, ‘অনেক ভালো লাগছে। খেলতে না পারায় খারাপ লাগছিল। ভেতরে জেদ তৈরি হয়েছিল—নেপালের বিপক্ষে ফিরেই গোল করতেই হবে। টিমমেটরাও বলছিল, “নেপালের সঙ্গে খেলেই দেখিয়ে দিবি।” ‘আজ সেটা করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’

আগের নেপাল ম্যাচে লাল কার্ড দেখার কারণে টানা তিন ম্যাচ বাইরে ছিলেন সাগরিকা। সেই বিরতি যে তাকে আরও ক্ষুধার্ত করে তুলেছিল, তা স্পষ্ট মাঠের পারফরম্যান্সেই। পুরো টুর্নামেন্টে মাত্র তিন ম্যাচ খেলেই করেছেন ৮ গোল। অথচ সর্বোচ্চ গোলদাতার স্বীকৃতি পেলেন না—যা নিয়ে একটুখানি আক্ষেপও থাকলো তার কণ্ঠে: ‘তিন ম্যাচ খেলতে পারলে হয়তো সর্বোচ্চ গোলদাতা হতে পারতাম। তবে এটা থেকেও অনেক কিছু শিখেছি। মাথা গরম করলে হবে না, ফরোয়ার্ডদের মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়।’

নেপালের খেলোয়াড়দের থেকে প্রেস করে বল কেড়ে নেয়ার মুহূর্তে সাগরিকা। ছবি: বাফুফে

শুধুমাত্র যে জালে বল জড়িয়েছেন সাগরিকা এটা কিন্তু তার খেলার ধরণের মোদ্দাকথা নয়, সাগরিকার প্রথম গোলটা বোধহয় কিছুদিন আগে ইণতার মায়ামির হয়ে মেসির গলকিপারকে পাশ কাঁটিয়ে গোল করাকে মনে করিয়ে দিয়েছিল। সাগরিকার পায়ে যেমন অসাধারণ একটা শেষ টাচ রয়েছে, একই সাথে তার রয়েছে দারুণ ড্রিবলিং, দলের বাকি সবার সাথে সংযোগ করে খেলার মানসিকতা এবং প্রতিপক্ষকে প্রেস করে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বল কেড়ে নেয়া। সব মিলিয়ে যেন এক আদর্শ ফরোয়ার্ড লাইনের খেলোয়ার হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করে যাচ্ছেন সাগরিকা।

বয়সভিত্তিক পর্যায়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করে চলেছেন সাগরিকা। ইতোমধ্যেই জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকলেও এখনও নিয়মিত হননি। তবে সাফের এই পারফরম্যান্স জাতীয় দলের দরজা আরও প্রশস্ত করে দিয়েছে বলে মনে করছেন কোচ পিটার বাটলার। এ বিষয়ে পিটার বাটলার বলেন ‘সে নিঃসন্দেহে দুর্দান্ত এক ফরোয়ার্ড। তার এই পারফরম্যান্সই জাতীয় দলে জায়গা পাওয়ার সেরা বার্তা। তবে আমাদের সিনিয়র দলে তহুরা, শামসুন্নাহার, রিতুরাও দারুণ খেলছে। তাই সাগরিকার লড়াইটাও সহজ হবে না, তবে সম্ভাবনা আছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *