মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: ২৫ দিন পর মারা গেলেন শিক্ষিকা মাহফুজা  

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
চলে গেলেন মাইলস্টোন স্কুল শিক্ষিকা মাহফুজা খাতুন। ফাইল ফটো

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকার ২৫ দিন পর মারা গেলেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা মাহফুজা খাতুন (৪৫)। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

এ নিয়ে এই ঘটনায় বিমানের পাইলটসহ এখন পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।

নিহত মাহফুজা খাতুনের চাচাতো ভাই মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘স্কুলটির ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষিকা মাহফুজা। সেদিন যখন স্কুল ছুটি হয়, তখন শিক্ষার্থীদের এক সারিতে দাঁড় করাচ্ছিলেন অভিভাবক। এমন সময় বিমান বিধ্বস্ত হলে আগুন লাগে তার শাড়িতে। শরীরে সেই আগুন নিয়েই বাচ্চাদের বের করার চেষ্টা করেন তিনি।’

এরপর দগ্ধ অবস্থায় তাকে নেয়া হয় সিএমএইচ-এ। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরদিন নিয়ে যাওয়া হয় বার্ন ইনস্টিটিউটে। সেখানে তার অবস্থার কিছুটা উন্নত হলেও সপ্তাহখানেক আগে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে তার শরীরে। এরপর নেয়া হয় আইসিইউতে। সেখানেই মারা গেছেন মাহফুজা।

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডিতে বিধ্বস্ত দিয়াবাড়ির স্কুল ভবন। ছবি: টাইমস

জানা গেছে, মাহফুজার বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দামুদিয়াড় গ্রামে। তার স্বামী বেঁচে নেই। অনার্স পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে আয়শাকে নিয়ে থাকতেন উত্তরাতে। মৃত্যুর আগে পরিবারের সদস্যদের বলে যান, দিয়াবাড়ি এলাকায় যেখানে মাইলস্টোন স্কুলের নিহত শিক্ষার্থীদের দাফন করা হয়েছে সেই একই কবরস্থানে যেন তাকেও দাফন করা হয়। পরিবারও সেই সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে বার্ন ইনস্টিটিউটে পরিচালক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ভর্তি রোগীদের মধ্যে মাহফুজা সিভিয়ার ক্যাটাগরিতে ছিলেন। মাঝে তার শারীরিক অবস্থা অনেকটা উন্নতি হয়। কিন্তু তার উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ছিল। ডায়াবেটিসের কথা তিনি নিজেও জানতেন না। এসব কারণে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হয়। সবশেষ তিনি মারা যান।’

পরিচালক আরও জানান, বর্তমানে এ ঘটনায় এখনো ২৩ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান বলেন, ‘বিস্ফোরণে মাহফুজার শরীরের ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। তবে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ায় মেডিকেল বোর্ডের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’

এ ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে এ পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৪ জন।

২১ জুলাই দুপুরে বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার পর এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করে অন্তর্বর্তী সরকার। দেশের ইতিহাসের ভয়াবহ এ সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের বেশিরভাগই শিশু।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *