আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সোমবার রাতে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির মুখপাত্র উপ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি মোবাইলে টেক্সট মেসেজে সাংবাদিকদের আরও জানান, রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে খুনের মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের জুনে বিএনপি কর্মী সৈয়দ হাসান মাহমুদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত অক্টোবরে একটি মামলা হয়। সেই মামলার আসামি মমতাজ। এছাড়া তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নামে দায়ের হওয়া একাধিক হত্যা মামলার সহযোগী আসামি।
লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ বেগম একাধিকবার মানিকগঞ্জ–২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। শুধু মমতাজ নামেই তিনি সমধিক পরিচিত।

১৯৭৪ সালের ৫ মে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলায় জন্মগ্রহণ করা মমতাজের পিতা মধু বয়াতি ছিলেন বাউল শিল্পী। ছোটবেলা থেকেই মমতাজ লোক গানের শিল্পী হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। প্রায় চার দশক পেশাদারী সংগীত জীবনে থাকা অবস্থায় তার ৭০০-এর বেশি একক অ্যালবাম বের হয়েছে।
লোক গানের শিক্ষক আব্দুর রশীদ সরকারের সাথে মমতাজের প্রথম বিয়ে হয়। তিনি মারা গেলে মমতাজ দ্বিতীয় বিয়ে করেন মানিকগঞ্জের পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা রমজান আলীকে। যদিও পরে তার সাথে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর মমতাজ বিয়ে করেন মইনউদ্দিন হাসান চঞ্চল নামে আরেক ব্যক্তিকে। মমতাজ সংগীত, রাজনীতির পাশাপাশি বিয়ে-বিচ্ছেদ নিয়ে একাধিকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। তিনি দুইবার শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে খুব বেশি সক্রিয় না থাকলেও মমতাজ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ সদস্য মনোনীত হন। এরপর ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে সরাসরি নির্বাচিত হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি একই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেও পরাজিত হন।