রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পর এবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি নিজেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় তিনি জানান, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আমন্ত্রণের’ জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে জেলেনস্কির সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে তিনি জেলেনস্কিকে একান্ত বৈঠকের আমন্ত্রণ জানান।
বিবিসি জানায়, ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপের পর ইউরোপীয় সামরিক জোট- নেটো’র নেতাদেরও ফোন করে ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট।
এরপর কিয়েভও এক বার্তায় জানায়, ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে জেলেনস্কির ‘দীর্ঘ ফোনালাপ’ হয়েছে।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি একটি দীর্ঘ ফোনালাপ ছিল। প্রথমে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ট্রাম্পের মধ্যে আলোচনা হয়। এরপর তাদের সঙ্গে যোগ দেন- যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেৎজ, পোলান্ডের প্রেসিডেন্ট ক্যারল নওরোকি, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব, নেটো মহাসচিব মার্ক রুটে এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন দের লেয়েন।’
এর আগে, স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় একান্ত বৈঠক করেন ট্রাম্প-পুতিন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আয়োজিত সে আলোচনায় জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানায়নি হোয়াইট হাউস। তবে যুদ্ধবিরতি বা কোনো ধরনের শান্তিচুক্তি ছাড়াই ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকটি শেষ হয়।

বৈঠকের আগে, ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ না করায় একাধিকবার ক্ষোভ জানিয়ে বার্তা দেন জেলেনস্কি। হুঁশিয়ারি বার্তায় তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া কোনো ধরনের শান্তিচুক্তি কিয়েভ মেনে নেবে না।’ তার সঙ্গে সম্মতি জানান ইউরোপীয় নেতারাও।
এমন পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, রাশিয়ার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা ফলপ্রসূ হলে দ্বিতীয় বৈঠক হতে পারে। সেখানে তিনি জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা নিয়েই রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে একান্ত আলাপ করতে ফেব্রুয়ারিতে জেলেনস্কিকে ওভাল অফিসে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। তবে দুই নেতার অনাকাঙ্ক্ষিত বাগবিতণ্ডায় পণ্ড হয় শান্তি আলোচনা।
একপর্যায়ে প্রতিনিধিদের নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় জেলেনস্কিকে। এমন আবহে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তপ্ততা ছড়ালেও ট্রাম্পের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসার আগ্রহ দেখান জেলেনস্কি।