জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও আইনি বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রোববার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে অনুষ্ঠিত প্রথম দিনের বৈঠকে ছয়জন আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। বৈঠকে উঠে আসে কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন, সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নিয়ে সনদকে আইনি কাঠামোয় আনা, বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ, এমনকি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের বিষয়টিও আলোচনায় আসে।
অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন বিচারপতি (অব.) এম এ মতিন, বিচারপতি (অব.) মইনুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া, আইনজীবী তানিম হোসেইন ও আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক।
আলোচনায় কেউ কেউ মত দেন, বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোয় অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ধারা নেই; সরকারটি গঠিত হয়েছে জনগণের ক্ষমতার প্রয়োগ ও উচ্চ আদালতের রেফারেন্সের ভিত্তিতে, তাই সংস্কার বাস্তবায়নের এখতিয়ার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে সনদকে সংবিধানের অংশ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। প্রয়োজনে গণভোটও হতে পারে, যাতে জনগণ সরাসরি মতামত জানান।
অন্যরা প্রোক্লেমেশন, লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) বা অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেন। তবে সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোতে অধ্যাদেশ কার্যকর হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়। আলোচনায় আরও বলা হয়, কিছু সংস্কার সরকার চাইলে এখনই অধ্যাদেশে বাস্তবায়ন সম্ভব, কিন্তু সংসদে অনুমোদন না পেলে এর কার্যকারিতা হারাবে। তাই পুরো সনদকে আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে আনার ওপর জোর দেওয়া হয়।
কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে মতামত নেওয়া হচ্ছে। আরও কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে এসব প্রস্তাব সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে।’
বৈঠকে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।