করপোরেট কোম্পানিগুলোর সিন্ডিকেট থেকে বাঁচতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের ডিম ও মুরগি উৎপাদনকারী খামারিরা। পোল্ট্রি ফিড, ভ্যাকসিন ও ওষুধের দামের স্বচ্ছতা নিশ্চতকরণে সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত ১০টি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
এ সময় প্রান্তিক ডিলার ও খামারিরা বলেন, ‘করপোরেট কোম্পানিগুলো কন্ট্রাক্ট-ফার্মিয়ের মাধ্যমে কৌশলে মুরগি ও ডিমের দাম কমিয়ে দিয়েছে। ফলে লোকসানে পড়ে ছয় মাসে অন্তত ১০ হাজার খামার বন্ধ হয়ে গেছে।’
পোল্ট্রি খাত এবং খামারিদের বাঁচানোর জন্য সরকারের প্রতি বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের দাবিগুলো হলো-ফিড, ভ্যাকসিন ও ওষুধের দামের স্বচ্ছতা; সরকারিভাবে ফিডমিল ও হ্যাচারি স্থাপন; প্রান্তিক খামারিদের জন্য নীতিগত সহায়তা ও জামানতবিহীন স্বল্পসুদে ঋণ; নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে প্রান্তিক খামারিদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণ; জাতীয় পোল্ট্রি শুমারি ও ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরি; ডিলার ও খামারিদের উদ্যোক্তা পরিচয়পত্র প্রদান; খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কোল্ড স্টোর চালু; ন্যায্য মূল্য ও বাজারসংযোগ নিশ্চিতকরণ; ডিম ও মুরগি রপ্তানির ব্যবস্থা; সংকট মোকাবিলায় প্রণোদনা; সুষ্ঠু কন্ট্রাক্ট ফার্মিং নীতিমালা প্রণয়ন এবং জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন বোর্ড গঠন।
গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের খামার বন্ধ হতে থাকলে, বাজারের একক নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে করপোরেটদের হাতে। এরপর তারা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেবে, যোগ করেন তারা।
খামারিদের অভিযোগ, ২০২৩ সালের মার্চে ব্রয়লার মুরগির দাম রেকর্ড ৩০০ টাকা কেজি উঠেছিল এই করপোরেট কারসাজির কারণেই। অনতিবিলম্বে সরকার যদি সতর্ক হয়ে পোল্ট্রি খাতের জন্য কোনো নীতিমালা প্রণয়ন না করে, তাহলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।
এ সময় বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)-এর সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘খামারে ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা, কিন্তু খামারিরা ৬ টাকা দরে বেচতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার মুরগিতেও কেজিপ্রতি লোকসান দিতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। খামারিরা কম দামে বিক্রি করলেও, সুবিধা নিচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী অসাধু চক্র।’
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)-এর সহ-সভাপতি বাপ্পি কুমার দে বলেন, ‘ন্যায্য দামে মুরগির বাচ্চা, খাদ্য ও ওষুধ কিনতে পারলে খামারিদের উৎপাদন খরচ কমে যাবে। কিন্তু করপোরেট কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত মূল্যে খামারিদের এসব কিনতে বাধ্য করায়, খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।’