রাজধানীর একটি আবাসিক ভবনে গভীর রাতে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও লুটপাটের অভিযোগে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তার হোসেন ও দুই উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল আহমেদ ও আব্দুল মান্নানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান মো. তালেবুর রহমান। তিনি জানান, ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনারের কাছে শিক্ষাবিদ এবং ‘ফিকামলি তত্ত্বের’ প্রবক্তা ড. আব্দুল ওয়াদুদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ হিসেবে ওই রাতের সিসিটিভির ফুটেজ জমা দিয়েছেন তিনি।
ড. ওয়াদুদের অভিযোগ, গত ২৯ এপ্রিল রাত দেড়টার দিকে কলাবাগান থানার ওসি মোক্তার হোসেন এবং দুই এসআই বেলাল ও মান্নানের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের এক দল পুলিশ তার সোনারগাঁও রোডের বাসভবনে এসে ‘অবৈধ অস্ত্র’ খোঁজার নামে বাড়ির একাধিক দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন। তিনি ভয় পেয়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করলে টহল পুলিশ ও শাহবাগ থানার ওসি ঘটনাস্থলে এলেও ওসি মোক্তার তাদের সরিয়ে দেন। সেসময় ওসি একজন ষাটোর্ধ ভাড়াটিয়া এবং একজন নাইট গার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের গাড়িতে তুলতে নির্দেশ দেন। এসআই বেলালের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ভবনের তৃতীয় তলার দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। এতে আশেপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগকারীর ভাষ্যমতে, এক পর্যায়ে ড. ওয়াদুদ নিজেই পুলিশের সঙ্গে থানায় যেতে রাজি হন। কিন্তু দরজা খোলার পর এসআই বেলাল ও মান্নান তাকে আবার ঘরের ভেতরে টেনে নিয়ে ‘অবৈধ অস্ত্রের’ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন এবং দাবি করেন, যদি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এক কোটি টাকা দিতে না পারেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হবে। পরে দুই লাখ টাকা দিয়ে এবং বাকি টাকা ব্যাংকিং আওয়ারে দেওয়ার শর্তে তিনি তাৎক্ষণিক হয়রানি থেকে মুক্তি পান।
ড. ওয়াদুদ আরও অভিযোগ করেন, পুলিশের অভিযানের সময় আতঙ্কিত হয়ে তার বৈধ (লাইসেন্স করা) মিনি চিড়িয়াখানার একটি গর্ভবতী হরিণ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়। বিদেশি দুর্লভ পাখিগুলো লুট হয়ে যায়। পুলিশ কম্পিউটার, ল্যাপটপ এবং সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্কও নিয়ে যায়।
ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণের পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।