বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘নির্বাচন বৈধ না হলে তার কোনো অর্থ নেই।’
মালয়েশিয়ায় সরকারি সফরকালে সিএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার কাজ হলো এমন একটি নির্বাচন নিশ্চিত করা যা গ্রহণযোগ্য, পরিচ্ছন্ন ও আনন্দদায়ক হবে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের শর্ত হিসেবে বিবেচিত ব্যাপক সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করার প্রস্তুতি রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ইউনূস বলেন, তারা নির্ধারিত লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। বিগত সরকারের রাজনৈতিক ব্যবস্থাটি ছিল কারচুপি, অপব্যবহার ও দুর্নীতির। তাই অনেক কিছুই সংস্কার করতে হয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সরকার আশ্রয় দিয়েছে। সেদেশে বসেই তিনি ‘মিথ্যা প্রচারণা’ চালাচ্ছেন বলেন অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মুহম্মদ ইউনূস বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন যে তারা সামাজিক মাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
হাসিনার আমলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল। তবে নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ঢাকার আঞ্চলিক কূটনীতিতে পরিবর্তন এসেছে। গত মার্চে ইউনূস বেইজিং সফর করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রবেশদ্বার হিসেবে উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে পরিচালিত এবং যে কেউ বিনিয়োগে আগ্রহী হলে তাদের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।
‘আমরা পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখি, ভারত সঙ্গেও রাখতে চাই। এটি বিনিয়োগের সুযোগ, চীনের জন্য আলাদা কিছু নয়’, বলেন তিনি।
রক্তক্ষয়ী জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ছাত্রনেতাদের অনুরোধে দায়িত্ব নিতে সম্মত হন ইউনূস।
‘এত রক্ত ঝরার পর তাদের ত্যাগ আমাকে নাড়া দেয়। তাই দায়িত্ব নিয়েছি,’ বলেন ৮৫ বছর বয়সী নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি স্পষ্ট করেছেন, নির্বাচনের পর তিনি আর সরকারে থাকবেন না।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করব, বাংলাদেশ সঠিক পথে এগোবে এবং আর কখনো পথভ্রষ্ট হবে না।’