মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর আত্মপ্রকাশ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার দাবিতে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করেছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা, নতুন প্রজন্ম ও ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ মঞ্চ গঠিত হয়েছে। আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (বীর প্রতীক) ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না এ প্ল্যাটফর্মের সমন্বয় করছেন।

মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস। লাখো শহীদের রক্ত, মা-বোনদের সম্ভ্রম আর কোটি কোটি মানুষের মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, একটি পতাকা নয়, একটি জাতীয় সংগীত নয়, বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন, চেতনা, আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার নিরন্তর সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। কিন্তু আমরা নিদারুণ বেদনা, ক্ষোভ আর হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছি, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।’

আগস্ট অভ্যুত্থানের পর কথিত নানা ঘোষণাপত্র এবং বয়ানের মধ্যে জাতির সামনে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আদর্শ অর্জনকে হেয় করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। ইতিহাস বিকৃতির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে প্রত্যাখ্যানের চেষ্টায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা গভীরভাবে মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ, বিজ্ঞপ্তিতে যোগ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, ‘এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা, নতুন প্রজন্ম এবং ছাত্র–জনতার প্রতিনিধিরা সংগঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে মঞ্চ ৭১–এর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ, ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র প্রতিহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষাসহ বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়।

দাবিগুলো হলো—১. জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা থাকবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষে অসম্মানজনক কিছু থাকলে তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে।

২. মুক্তিযুদ্ধের অর্জন, ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলে তথাকথিত নতুন সংবিধান প্রণয়ন করার অপপ্রয়াস বাঙালি জাতি কোনো দিন মেনে নেবে না।

৩. কোনো রাজনৈতিক দলের অপরাধ ও ব্যর্থতার দায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করা যাবে না।

৪. মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা, ইতিহাস মুছে ফেলা, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ানো, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করার সঙ্গে সংযুক্ত সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার এবং বিচার করতে হবে।

৫. অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তাদের বলতে হবে, তারা কী মনে করে, কী করবে আর কী করবে না।

এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যদি এসব পরামর্শ উপেক্ষা করে তথাকথিত কোনো ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস–ঐতিহ্য বিকৃত করা হয়, মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করা হয়, তাহলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় মঞ্চ ৭১ ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *