খাগড়াছড়ির দীঘিনালার দুর্গম পাহাড়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস, সন্তু) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ, প্রসিত) গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে।
পাহাড়ের স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, বাবুছড়া ইউনিয়নের নারাইছড়ি বিওপি থেকে আনুমানিক আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব কোনে জোড়াসিন্দু কারবারি এলাকায় জেএসএস-ইউপিডিএফ দুই প্রধান গ্রুপের মধ্যে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ওই সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় প্রথমে ৪ জন নিহতের শোনা গেলেও কোনো পক্ষই বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
সবশেষ, শনিবার দুপুরে ইউপিডিএফ এক বিৃবতিতে তাদের কর্মী হতাহতের কথা অস্বীকার করেছে। তবে জেএসএস-এর পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে গত আড়াই দশকে পাহাড়িদের আঞ্চলিক ওই দুটি দল ও তাদের আরো দুটি উপদল প্রায়ই সশস্ত্র সংঘাতে জড়ায়। জেএসএস (সন্তু) গ্রুপ শান্তিচুক্তি পক্ষীয়, আর ইউপিডিএফ (প্রসিত) নিজেদের শান্তিচুক্তি বিরোধী বলে প্রচার করে আসছে। কোনো পক্ষই সশস্ত্র তৎপরতার কথা স্বীকার না করলেও অধিপত্যকে কেন্দ্র করে গ্রুপগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে এ পর্যন্ত বহু সংখ্যক হতাহত হয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তা অভিযানে গ্রুপগুলোর অনেক ক্যাডার অস্ত্র-শস্ত্রসহ আটকও হয়েছেন।
এমন আবহে দীঘিনালার পাহাড়ে ওই সশস্ত্র সংঘাতের খবর জানা যাচ্ছে।
দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকারিয়া টাইমস অব বাংলাদেশকে জানান, দীঘিনালার দুর্গম ওই এলাকায় গোলাগোলিতে ৪ নিহত হওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তবে তা সঠিক কি না তা তিনি নিশ্চিত নন।
ওসি জাকারিয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থল দুর্গম এলাকায় হওয়া যৌথবাহিনী ছাড়া পুলিশের পক্ষে সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়।’
ইউপিডিএফ-এর মুখপত্র অংগ্য মারমা টাইমস অব বাংলাদেশকে জানান, জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের সাথে তাদের শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঝামেলা হয়েছে। তবে এ ঘটনা কেউ মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি।
অংগ্য মারমা বলেন, ‘দলের কর্মী মারা গেলে তারা আগেই প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানাতেন।’
সবশেষ, ইউপিডিএফ এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেছে, দীঘিনালার বাবুছড়া জোড়া সিন্ধু কার্বারি পাড়ায় জনসংহতি সমিতির (সন্তু) গ্রুপের সাথে শুক্রবার গোলাগুলিতে ইউপিডিএফ-এর চার সদস্য নিহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর প্রচারিত হয়েছে, তা ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও গুজব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ইউপিডিএফ একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে “গণমুক্তি ফৌজ” বা “পিপলস্ লিবারেশন আর্মি” নামে তার কোন সামরিক শাখা থাকার প্রশ্ন একেবারে অবান্তর ও কাল্পনিক।’
এ বিষয়ে জেএসএস (সন্তু) গ্রুপের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।