ফোরো ইতালিকোর ভরা গ্যালারিতে স্বাগতিক সমর্থকদের চাওয়া ছিল একটা রূপকথা। কিন্তু সেই রূপকথার বইয়ে কালি ছিটিয়ে দিয়ে শিরোপা ছিনিয়ে নিলেন কার্লোস আলকারাজ।
রোববার রাতে রোম মাস্টার্স ফাইনালে স্প্যানিশ তারকা আলকারাজ ৭–৬ (৭–৫), ৬–১ সেটে হারিয়েছেন ইতালির প্রিয়পাত্র জান্নিক সিন্নার। এই জয়ে আলকারাজ কেবল নিজের তৃতীয় ক্লে কোর্ট মাস্টার্স খেতাবই জিতলেন না, বরং সিনারের রোমান প্রত্যাবর্তনটাকেও করলেন বিস্বাদ।
তিন মাসের ডোপিং নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে আসা সিনারের জন্য এটা ছিল এক আবেগঘন টুর্নামেন্ট। ম্যাচের শুরুটা তাই ছিল লড়াকু। প্রথম সেটে সিনারের কাছে সুযোগ এসেছিল ৬–৫ তে আলকারাজের সার্ভে দুইবার সেট পয়েন্ট আদায় করার। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন তিনি। আলকারাজ টাইব্রেকারে নিজের নার্ভ ধরে রেখে জিতে নেন প্রথম সেট।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দ্বিতীয় সেটে একদম তান্ডব দেখান ২১ বছর বয়সী স্প্যানিয়ার্ড। টানা পাঁচ গেম জিতে নেন একটানা। সিনারের ম্যাচ ফিটনেসের ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে পড়ে। ম্যাচের শেষটায় স্বাগতিক সমর্থকদের নিস্তব্ধতা যেন বলে দিচ্ছিল সব।
এই জয়ে সিনারের ২৬ ম্যাচের জয়রথ থেমে গেল, যা শুরু হয়েছিল গত বছরের অক্টোবরে। সে সময় চীন ওপেনের ফাইনালেও আলকারাজের কাছেই হেরে গিয়েছিলেন তিনি। হেড-টু-হেড পরিসংখ্যানে এখন ৭–৪ তে এগিয়ে আলকারাজ। শুধু তাই নয়, গত বছর থেকে শুরু করে একাধিকবার সিন্নাকে হারানো একমাত্র খেলোয়াড়ও তিনিই—টানা চারবার!
ইতালি যদিও আগের দিন নারী এককে জেসমিন পায়োলিনির শিরোপা উদযাপন করেছে, কিন্তু পুরুষ এককে সেই আনন্দটা আর পাওয়া গেল না। ১৯৭৬ সালে আদ্রিয়ানো পানাত্তার পর এখনো পর্যন্ত কোনো ইতালিয়ান পুরুষ খেলোয়াড় রোমের এই খেতাব জিততে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর এটাই ছিল সিনারের প্রথম ম্যাচ। ডোপিং ইস্যুতে বিশ্ব অ্যান্টি–ডোপিং সংস্থার সঙ্গে সমঝোতার কারণে তিনি গ্র্যান্ড স্লাম মিস করেননি। তবে দীর্ঘদিন কোর্টের বাইরে থাকার প্রভাবটা রোমে স্পষ্ট ছিল।
অন্যদিকে আলকারাজ যেন ফ্রেঞ্চ ওপেনের আগে নিজের ফর্মের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞাপন দিলেন। মাদ্রিদ ওপেন থেকে ইনজুরির কারণে নাম প্রত্যাহার করলেও মন্টে কার্লো জিতেছেন, বার্সেলোনায় হয়েছিলেন রানার্সআপ। এবার রোমের মঞ্চে ছড়ালেন দাপট।
এই জয়ে তিনি বিশ্বের দুই নম্বরে উঠে এলেন। আর রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ, গুজতাভো কুয়েরতেন ও মার্সেলো রিওসের পাশে বসে গেলেন সেই তালিকায়—যাঁরা ক্যারিয়ারে তিনটি ক্লে কোর্ট মাস্টার্স (মন্টে কার্লো, মাদ্রিদ ও রোম) সব কটিই জিতেছেন।