উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি নামলেও কমেনি দুর্ভোগ

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
তিস্তার প্লাবনে তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। ছবি: টাইমস

টানা পাঁচদিন ভারি বৃষ্টিপাত ও বন্যার পর উত্তরাঞ্চল থেকে ধীরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষত। এছাড়া বন্যার পানি কমতে থাকায় উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র হয়েছে নদীভাঙন।

উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে ১১ আগস্ট রাতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। এতে তলিয়ে যায় রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়ে পাঁচ জেলার প্রায় ৪০ হাজার পরিবার।

নদীগর্ভে বিলীন হয় ঘরবাড়ি ও নদীপাড়ের ফসলি জমি। বন্যার পানিতে পঁচে নষ্ট হয়েছে রোপা আমনের খেত। গৃহপালিত পশু, মাছের ঘের হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চলের মানুষ।

ভুক্তভোগীরা জানান, রোববার থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও দুর্ভোগ কমেনি। ভেসে আসা ময়লা-আবর্জনায় পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে গেছে। বেড়েছে সাপের উপদ্রব।

পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হচ্ছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। ছবি: টাইমস

সরেজমিনে দেখা যায়, অনেকেই প্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাননি। সেগুলো এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানির তোড়ে নষ্ট হওয়া ঘরবাড়ি মেরামত করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে।

বন্যাকবলিত অঞ্চলের কৃষকেরা জানান, এ বছর বর্ষা মৌসুমে তারা দফায় দফায় ভুক্তভোগী হয়েছেন। প্রতিবারই পানি নেমে যাওয়ার পর নতুন করে বীজতলা তৈরি করছিলেন তারা। তবে বন্যার পানিতে কয়েকদিন ডুবে থাকায় সব চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার বীজতলা তৈরির মতো চারা নেই তিস্তাপাড়ের কৃষকদের কাছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বর্ষায় তৃতীয়বারের মতো বন্যার কবলে পড়েছে উত্তরাঞ্চল। এতে পাঁচ জেলার অন্তত চার হাজার ৭১৫ হেক্টর জমির আমন খেত ও অন্যান্য ফসল ডুবে গিয়েছে। এ দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সরকারিভাবে প্রান্তিক চাষিদের চারা সরবরাহ করা হবে। এছাড়া যেসব কৃষক ক্ষতির মুখে পড়বে তাদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

তিস্তার প্লাবনে ডুবেছে নিম্নাঞ্চল। ছবি: টাইমস

এদিকে, তিস্তায় পানি কমে যাওয়ায় ভাঙনের শঙ্কা জানিয়েছেন নদীপাড়ের মানুষেরা। ইতোমধ্যে রংপুরের গংগাচড়া, পীরগাছা, রাজারহাট; নীলফামারীর ডিমলা ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ২৩টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন দেখা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, পানি কমতে থাকায় ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার গর্ভে ৩৮টি বসতবাড়ি বিলীন হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরও অন্তত ১৪৩টি বাড়ি।

ভিটেমাটি রক্ষায় শিগগিরই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *