গাজীপুরে প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলার মেট্রোপলিটন পুলিশ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ।
পুলিশ জানিয়েছে, বাসন থানায় নিহতের বড় ভাই সেলিম মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। তুহিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে চৌরাস্তায় ঈদগাহ মাঠে জানাজার জন্য নেওয়া হয়েছে।
জানাজার শেষে পরিবারের নিকট মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। তুহিনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ ফুলবাড়িয়ায় পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতের ওই হত্যাকাণ্ডের সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে এরই মধ্যে চার-পাঁচজন সন্দেহভাজন হত্যাকারীকে সনাক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পৌরসভার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির ওপর হামলার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী চক্র। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে মসজিদ মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর গাজীপুর প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চান্দনায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করতেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার রবিউল ইসলাম জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি ও এক নারীর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। বাদশা ওই নারীকে আঘাত করলে ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত নারীর পক্ষ নিয়ে তাকে আক্রমণ করে। বাদশা দৌড়ে পালিয়ে গেলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তুহিন মোবাইলে পুরো দৃশ্য ধারণ করছিলেন।
পুলিশের ভাষ্য, দুর্বৃত্তরা ভিডিও মুছে ফেলতে বললেও তুহিন অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তুহিনকে ধাওয়া করে। তিনি প্রাণ বাঁচাতে কাছের একটি চায়ের দোকানে ঢুকলে সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে বুক, গলা, কাঁধ ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
আহত বাদশা মিয়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। পুলিশ জানায়, ভিডিওতে দেখা নারী মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে ছিনতাই করার একটি চক্রের সদস্য হতে পারেন। বাসন, ভোগরা ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এ চক্র দীর্ঘদিন সক্রিয়।
তুহিনের সহকর্মী শামীম হোসেন বলেন, ‘তুহিন ভিডিও করছিলেন দেখে দুর্বৃত্তরা ক্ষিপ্ত হয়। ওরা ভিডিও মুছতে বললে তুহিন রাজি হয়নি। তারপরই ওদের হামলায় সে মারা যায়।’
পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় মামলা নথিভুক্ত করেছে পুলিশ, জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।