উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি কিছুটা কমলেও, তিস্তার পানি এখনো বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে ফের বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ জেলার হাতীবান্ধায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ ৫২ মিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে। এর আগে, সকাল ৬টার দিকে পানির পরিমাণ ছিল ৫২ দশমিক ১০ মিটার, যা বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। তবে রোববার সকালে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল।
রাতেই নদী তীরবর্তী অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আমন ধানের চারা, সবজির মাঠ, পুকুর ডুবে গেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। এখন নৌকা ও ভেলাই যোগাযোগের একমাত্র ভরসা। পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারি, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
এ ছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী ও নোহালী; আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী; সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়ন নিম্নাঞ্চলগুলোও প্লাবিত হয়েছে এই ঢলে।
গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার পানি বেড়ে রাতেই ঘরে ঢুকে গেছে। গরু-ছাগল নিয়ে খুব বিপাকে পড়েছি। কোনো জনপ্রতিনিধি বা সরকারি লোক খোঁজ নেননি। আমরা কি কখনো স্থায়ী সমাধান পাব না?’
খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের জালাল মিয়া বলেন, ‘বন্যায় রান্না বন্ধ। বাচ্চাদের স্কুলও বন্ধ। রাজনৈতিক নেতারা তালিকা নিলেও কেউ খোঁজ নেয় না এবং ত্রাণ বা সহায়তাও পাওয়া যায় না।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, ‘রোববার তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। এখন কিছুটা কমলেও নিম্নাঞ্চলে সতর্কতা জারি রয়েছে। দুই-তিনদিন এই পরিস্থিতি স্থায়ী হতে পারে। তবে পানি আবার বাড়বে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’