পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুর্গম নাইক্ষ্যংছড়িতে অপহরণের তৃতীয় দিনেও হদিস মেলেনি প্রবাসীর শিশু পুত্র বাপ্পির। র্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর বিশেষ দল টানা অভিযান চালিয়েও অপহরণকারী বা শিশুটির অবস্থান সম্পর্কে এখনো কিছু জানাতে পারেনি।
গত ৪ জুলাই বান্দরবানের রুমার দুর্গম পাহাড়ে নিরাপত্তা অভিযানে সন্ত্রাসী গ্রুপ ‘কুকিচিন ন্যাশনাল আর্মি’র (কেএনএ) এক কমান্ডারসহ দুই জন নিহত হন। অভিযানে উদ্ধার করা হয় বেশকিছু অস্ত্র-শস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম। পাশের জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাটেও শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ, প্রসিত)-এর আস্তানায় অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় অস্ত্র ও গোলাবারুদ। এসব সাফল্যের ভেতরেই নাইক্ষ্যংছড়ির ওই শিশু অপহরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মহলে শুরু হয়েছে তোলপাড়।
এর আগে গত ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী ইউনিয়নের রাঙ্গাঝিরি এলাকার বাড়ি থেকে সাত বছর বয়সী শিশুটিকে অপহরণ করে সশস্ত্র মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। শিশু বাপ্পির বাবা সাবুল কাদের সৌদি আরব প্রবাসী বলে জানা গেছে।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা প্রথমে ১০ লাখ টাকা এবং পরে তা কমিয়ে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে এরপর তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল করীম টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘অপহরণের ঘটনাস্থল মিয়ানমার সংলগ্ন গহীন এলাকায় হওয়ায় বেশ সতর্কতার সঙ্গে অভিযান চালাতে হচ্ছে।’
‘শিশুটিকে অক্ষত ও সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে আনাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ,’ যোগ করেন তিনি।
পুলিশের এই কর্মকতা আরো বলেন, ‘আমরা অনেকটা পথ এগোতে পেরেছি। কিন্তু কৌশলগত কারণে এখন সব তথ্য প্রকাশ করতে চাইছি না।’
জানা গেছে, বাপ্পি অপহরণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার তিন জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর একজনকে ছেড়ে দিয়ে আবদুর রহমান ও মো. হাসেম নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ওই গ্রেপ্তারের পরেই সব যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে অপহরণকারীরা।
তবে তাদের এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
অপহরণস্থল রাঙ্গাঝিরি এলাকাটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানা থেকে ৩০ কিলোমিটার এবং বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। অন্যদিকে সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের রামু থানার কাগজীখোলা পুলিশ ক্যাম্প থেকেও এর অবস্থান ৭ কিলোমিটার দূরে।
অবস্থানগত কারণে রাঙ্গাঝিরি ও আশপাশের এলাকায় ঘন ঘন ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তবে এবারই প্রথম মুক্তিপণের জন্য কাউকে অপহরণ করা হলো।