পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অপহরণ হওয়া চারজন টেলিকম কর্মীকে উদ্ধারসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাইভেট টেলিকমিউনিকেশন কর্মচারী ইউনিয়ন।
ইউনিয়নের দাবিগুলো হলো—অপহৃত সব কর্মীকে অবিলম্বে জীবিত ও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা; অপহরণকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা; পার্বত্য অঞ্চলে টেলিকম খাতের কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ; টাওয়ার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা ও তদারকি বৃদ্ধি করা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিক ও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ।
সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ প্রাইভেট টেলিকমিউনিকেশন কর্মচারী ইউনিয়ন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন ইউনিয়নের সভাপতি মো. মাকসুদুর রহমান রাকিব।
তিনি জানান, ১৯ এপ্রিল সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার ময়ুবখালী এলাকায় রবি টাওয়ারে কাজ করার সময় মো. ইসমাইল মিয়া ও আব্রো মারমা অপহৃত হন। আবার ৫ জুন সন্ধ্যা ৭টায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার লেলাং ইউনিয়নের কর্ণফুলী বাজার এলাকায় রবি টাওয়ারে দায়িত্ব পালনকালে মোহাম্মদ সুমন ইসলাম ও আব্দুর রহিম সন্ত্রাসীদের দ্বারা অপহৃত হন।
অপহৃত টেলিকম কর্মীরা মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার নেটওয়ার্ক পরিচালনায় নিয়োজিত ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড ও সার্বস কমিউনিকেশন লিমিটেডের অধীনে কাজ করছিলেন বলেও জানান তিনি।

মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলো আউটসোর্সে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত লেবার কোর্ট লইয়ার সোসাইটির জয়েন্ট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম বলেন, ‘মোবাইল কোম্পানিগুলো সার্ভসের মাধ্যমে অস্থায়ী পদে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছে যা সম্পূর্ণ অবৈধ।’
অপহরণের বিষয়ে ইউনিয়নের সদস্যদের ধারণা, টাওয়ার মেরামত ও সংরক্ষণ কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে পাহাড়ি একটি গ্রুপের বিরোধের জেরে এই অপহরণ সংঘটিত হয়েছে। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে, যা পরবর্তীতে মীমাংসাও হয়। কিন্তু এবার অপহরণের বিষয়টি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হলেও পুলিশ প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
মোবাইল কোম্পানিগুলো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শুধু সময় নষ্ট করছে, যোগ করেন তিনি।
এ সময় ১৫ দিনের মধ্যে তাদের দাবিগুলো মেনে অপহৃত কর্মীদের উদ্ধার করতে না পারলে রবি, সার্ভস, ইউটকো ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় ঘেরাও এর হুশিয়ারিও দেন ইউনিয়নের সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ গামেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিরিয়াল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আক্তার, বাংলালিংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি গোলাম মাহমুদ সোহাগ, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানিক উদ্দিন প্রমুখ।