বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সম্প্রতি চীন সফরে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল তিস্তা প্রকল্প, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে।
ঢাকার গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল জানান, পাঁচদিনের ওই সফরে প্রতিনিধিদলটি চীনের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে। এদের মধ্যে ছিলেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) পলিটব্যুরোর সদস্য ও এনপিসি স্ট্যান্ডিং কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হোংঝং, সিপিসি’র আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানচাও এবং ভাইস মন্ত্রী সান হাইয়ান।
ফখরুল বলেন, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ঐতিহাসিক অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
তিনি জানান, বিএনপি তাদের এক চীন নীতির প্রতি অটল অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বে চীনের বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে, বিশেষ করে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের। সিপিসি পলিটব্যুরোর সদস্য লি হোংঝং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি তিস্তা নদী প্রকল্পের বিষয়টি তুলেছে এবং দেশের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করেছে। চীন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে এবং এ বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যতে যদি বিএনপি সরকার গঠন করে এবং এ বিষয়ে প্রস্তাব আসে, তবে তা ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে এবং চীন মিয়ানমারকে নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে রাজি করাতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’
ফখরুল জানান, চীন চায় বাংলাদেশ তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুক।
তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আরও যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, যোগাযোগ, কৃষি, এসএমই, ব্লু ইকোনমি এবং প্রযুক্তি স্থানান্তর।’
মির্জা ফখরুল জানান, চীন বিএনপির সঙ্গে দুই বছরের রাজনৈতিক সহযোগিতা চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে, যা বিএনপি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘চীন যেকোনো নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।’
চীন সফরে বিএনপির প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, জহির উদ্দিন স্বপন, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল ও চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার। সংবাদ সম্মেলনেও তারা উপস্থিত ছিলেন।