দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করছে অন্তর্বর্তী সরকার। শিগগিরই এটি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা দীপংকর বর।
শুক্রবার বার্তা সংস্থা বাসসকে তিনি বলেন, ‘দ্বীপটির জন্য একটি মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। এর পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিকল্প আয়ের উপায় নির্ধারণের কর্মসূচিও হাতে নেওয়া হয়েছে।’
দ্বীপটির প্রতিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থাৎ প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আবার দ্বীপকে সুস্থ ও জীবন্ত করে তুলতে সেখানে পর্যটন ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ আরোপসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে মহাপরিকল্পনায় কী কী বিষয় রয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানাননি এই কর্মকর্তা।
এর আগে গত ১২ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সভা শেষে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছিলেন, সেন্ট মার্টিনের প্রতিবেশ রক্ষায় পর্যটকদের ওপর পরিবেশ সংরক্ষণ ফি ধার্য করবে সরকার। আর এই ফি থেকে আয় হওয়া অর্থ কাজে লাগানো হবে দ্বীপের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায়।
এছাড়া পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল স্থানীয়দের দক্ষতার উন্নয়ন করে বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতেও কাজ শুরু করছে সরকার।
গত বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনায় আসে সেন্ট মার্টিন প্রসঙ্গ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পক্ষ থেকে সেসময় বারবার বলা হচ্ছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এই দ্বীপটিতে ঘাঁটি নির্মাণ করতে চায়।
অবশ্য এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এমনকি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এমন দাবিও করা হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রকে সেন্ট মার্টিন ব্যবহার করতে দিলে এ পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না শেখ হাসিনাকে।
এমন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে গত অক্টোবর থেকে সেন্ট মার্টিনের জন্য নানা বিধিনিষেধ আরোপ করতে থাকে। বেধে দেওয়া হয় পর্যটক প্রবেশের সংখ্যা, নিষেধাজ্ঞা আসে রাত্রিযাপনেও।
জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত সেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় সরব হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নিষেধাজ্ঞা ঘিরে ডানা মেলে গুজব।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বারবারেই আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, প্রবাল দ্বীপটির প্রতিবেশ রক্ষার প্রয়োজনেই এসব উদ্যোগ। যার ধারাবাহিকতায় এবার আসতে যাচ্ছে মহাপরিকল্পনা।