অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের তরুণদের পথভ্রষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে বিপ্লবী যুব সংহতি আয়োজিত এক আলোচনায়। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সমালোচনার পাশাপাশি উঠে আসে, কিছু তরুণের প্রতি পক্ষপাত করতে গিয়ে দেশের বাকি তরুণদের পথভ্রষ্ট করার অভিযোগ।
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ‘তরুণ যুবাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা প্রাপ্তির খতিয়ান’ শীর্ষক আলোচনার আয়োজন করেছিল বিপ্লবী যুব সংহতি।
নিজের বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে এত বড় অভ্যুত্থান পৃথিবীতে আর ঘটেনি । যা আমাদের তরুণদের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এই সরকার দেশের সব তরুণদের স্পিরিট ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার কিছু তরুণেরর প্রতি পক্ষপাত করতে গিয়ে দেশের সকল তরুণদের পথভ্রষ্ট করছে।’
শর্তহীনভাবে বর্তমান সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু সরকার তা বুঝতে পারেনি। মনন ও দূরদর্শিতার অভাবে তারা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।’
সরকার বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর পক্ষ অবলম্বনের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘জনগণের ওপর ভর করার বদলে সরকার অল্প কিছু তরুণদের ওপর ভর করায় বিতর্কিত হয়েছে। দরকার হলে উপদেষ্টা পরিষদ বদলান, যারা বিতর্কিত তাদের বাদ দিন। নির্বাচনের সময় আপনাদের দায়িত্ব হবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ন্যায়। অহেতুক বিতর্কে জড়িয়ে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবেন না।’
আলোচনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্টের পর অনেকে লোভে পড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘টেন্ডার-ট্রান্সফারের জন্য কাউকে জিম্মি করে পার পেয়ে যাবেন ভাবলে সেটা হবে দুরাশা। এভাবে কিছু অর্জন করলে তার পরিণতি হবে ডাস্টবিনে।’
জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করার জন্য নির্বাচন ও নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জুলাইকে বিএনপি অনেক বড় পরিসরে দেখে জানিয়ে এই নেতা বলেন, ‘জুলাইয়ের পর সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলো গুণগতমান পরিবর্তন করবে এবং রাজনীতিবীদরাও তাদের গুণগত মানের পরিবর্তন ঘটাবেন।’
আলোচনায় উঠে আসে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নারীদের পেছনে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টার প্রসঙ্গ, আসে উগ্র ডানপন্থার উত্থান প্রসঙ্গও।
দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এহসান মাহামুদ বলেন, ‘হাসিনার পতনের পর যদি কর্মসংস্থানের জন্য কেউ আন্দোলন করে এবং তাকে পুলিশের রাবার বুলেট বুকে নিতে হয় তবে তা দুঃখজনক। এটি যা জুলাই স্পিরিটের বিপরীত।’
সরকার তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য কার্যকারী কোনও উদ্যোগ না নেওয়ায় হতাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম, বিপ্লবী যুব সংহতির সভাপতি বাবর চৌধুরী, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোরশেদ মামুনসহ অন্যরা।