শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের আলেমদের সহায়তা চায় সরকার। তারা ধর্মীয় বয়ানে শব্দ দূষণ রোধ, প্লাস্টিক দূষণ, পাহাড় কাটাসহ বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ সচেতনতামূলক কথা বলবেন; এমনটাই প্রত্যাশা অন্তর্বর্তী সরকারের।
সোমবার পরিবেশ অধিদপ্তরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কর্মপন্থা নির্ধারণে আয়োজিত এক মতবিনিময়ে এসব কথা উঠে আসে।
দেশের বিশিষ্ট আলেমদের সঙ্গে এ মতবিনিময়ে কথা বলেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের আলেম-উলামাদের সহায়তা প্রয়োজন। তারা এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা জমা দেবেন বলে সরকারের প্রত্যাশা। তারা ধর্মীয় বয়ানে প্লাস্টিক দূষণ, পাহাড় কাটা, পাথর উত্তোলন রোধসহ পরিবেশ সচেতনতার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করলে মানুষের আচরণ পরিবর্তনে তা অত্যন্ত কার্যকর হবে।’
উন্নত দেশগুলোয় সরকার ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগে শব্দদূষণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশেও আমরা এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা শুধু বক্তৃতা নয়, বাস্তব কাজ শুরু করতে চাই। কনসার্ট, অ্যাম্বুলেন্স ও পরিবহন খাতে নিয়ন্ত্রিত শব্দ ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে।’
এসময় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘হাদিস শরীফসহ বহু ইসলামী গ্রন্থে শব্দ সংযমের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে উচ্চ শব্দে মাইক ব্যবহার শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জন্য কষ্টকর।’
‘উচ্চ শব্দ শুধু কানে ব্যথা দেয় না, নার্ভাস সিস্টেমেও বিরূপ প্রভাব ফেলে। অহেতুক হর্ন বা শব্দ তৈরি ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী।’
তিনি সব ধরনের দূষণ রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে দেশের আলেমদের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় অংশ নেওয়া আলেমরা শব্দদূষণ রোধে সরকারের কাছে পরিকল্পনা দিতে সম্মত হন। তারা পরিবেশ ও ধর্ম উপদেষ্টার আহ্বান অনুযায়ী কোরআন-হাদিসভিত্তিক বার্তার মাধ্যমে শব্দদূষণবিরোধী সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, ইএনটি হেড-নেক ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ এবং শব্দ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প পরিচালক ফরিদ আহমেদ।