রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। তবে এই বাড়তি শুল্কের পরও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন তিনি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় আমরা প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে থাকব। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে আমরা ২০ শতাংশের নিচে প্রত্যাশা করেছিলাম।’
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান আলোচক ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আলোচনা করেছি, যাতে আমাদের প্রতিশ্রুতি জাতীয় স্বার্থ ও সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। আমাদের পোশাকশিল্প রক্ষা ছিল অগ্রাধিকার। আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিপণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপ্রধান রাজ্যগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যেও ব্যবহার করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমরা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কের সম্ভাবনা সফলভাবে এড়াতে পেরেছি। এটা আমাদের পোশাকশিল্প এবং এ খাতে নির্ভরশীল লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য সুসংবাদ। আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে পেরেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগও তৈরি হয়েছে।’
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশের ওপর নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। আগেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল। সেই তুলনায় নতুন হার কিছুটা কম হলেও, এতে রপ্তানির ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৩৫ শতাংশ– বর্তমান গড় ১৫ শতাংশের সঙ্গে নতুন ২০ শতাংশ মিলিয়ে।
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত আদেশে আরও দেখা যায়, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার ওপর ১৯-২০ শতাংশ এবং মিয়ানমারের ওপর সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
শুল্ক ইস্যুতে আলোচনা চালাতে বাংলাদেশের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছে। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে তিন দিন ধরে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভের (ইউএসটিআর) সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা। প্রতিনিধি দলে আরও রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাউসার চৌধুরী।