ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে নতুন করে উত্তেজনার মধ্যেই ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির’ আভাস দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা কেবল একটি যুদ্ধবিরতির জন্য নয়, তার চেয়েও ভাল কিছুর দিকে এগোচ্ছি।’
এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তেহরান থেকে সাধারণ মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ফলে ধারনা করা হচ্ছিল যে পরিস্থিতি আরও জটিল দিকে যেতে পারে। তবে এখন তিনি তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন।
গত কয়েক রাত ধরেই ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। পঞ্চম দিনের মতো চলছে এ সংঘর্ষ।
বিবিসি প্রতিবেদকদের বরাতে জানা গেছে, সোমবার রাতেও তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাজধানী তেহরানের আকাশে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওয়াজ শোনা গেছে।
ইরান তাদের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার জবাবে দুই দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এর ফলে ইসরায়েলের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে সাইরেন বেজে ওঠে।
তবে জেরুজালেম থেকে বিবিসি জানিয়েছে, আগের রাতগুলোর তুলনায় এবারের হামলা কম তীব্র ছিল এবং এখন পর্যন্ত কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা বেশ ভাল অবস্থায় আছি। মনে রাখবেন, ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না। সেটাই সবচেয়ে বড় বিষয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই মানুষ নিরাপদে থাকুক। তাই তেহরান থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছিলাম।’
গত সপ্তাহে ইসরায়েল ইরানের সামরিক স্থাপনা এবং পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে হামলা চালায়, যাতে দেশটির কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানী নিহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান পাল্টা হামলা শুরু করে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশিরভাগ ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনকে মাঝপথেই ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। তবে কিছু হামলা প্রতিরক্ষা ভেদ করে মূলভূখণ্ডে আঘাত হেনেছে।
আন্তর্জাতিক মহল এই সংঘাতকে বড় ধরনের যুদ্ধের পূর্বাভাস হিসেবে দেখছে। যদিও এ পর্যন্ত কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি।
ট্রাম্প প্রশাসনের বক্তব্যে যেমন আশার আলো দেখা যাচ্ছে, তেমনি স্পষ্ট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সরাসরি জড়াতে চাইছে না—তবে ইসরায়েলের নিরাপত্তার বিষয়টিকে তারা অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি হয়ে উঠেছে, কারণ সামান্য উসকানি থেকেও পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।