জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে আমরা গণঅভ্যুত্থানের দিকে নিয়ে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাই, মানুষের ভোটাধিকার চাই, মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই। কিন্তু আমরা বলেছি, শুধু ভোটাধিকারের মাধ্যমে, শুধু এক সরকার থেকে আরেক সরকার পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনার আমার জীবনের কোনো পরিবর্তন হবে না।’
সোমবার দুপুরে জামালপুর শহরের ফৌজদারি মোড়ে এনসিপি আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আপনার আমার জীবনের পরিবর্তন হবে-যদি সংস্কার হয়, যদি অর্থনৈতিক, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংস্কার হয় এবং যদি প্রকৃত গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারি। আর আমরা এমন একটা সংসদ করতে পারি যেখানে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে; যেখানে এক ব্যক্তি যেখানে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর কথায় কোনো রাষ্ট্র কোনো সরকার পরিচালিত হবে না। আমরা সেই সরকার সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য সেই নতুন দেশের জন্য কথা বলে যাচ্ছি।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা বলেছি-জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র অবশ্যই ৫ আগস্টের আগে জারি করতে হবে। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে প্রোপাগান্ডা করা হচ্ছে, আমরা নাকি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছি। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। এ গণঅভ্যুত্থান নাহলে আপনারা নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না।’
বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারের জন্য, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে আমরা যদি সরকার পতনের আন্দোলনের দিকে না নিয়ে যেতাম তাহলে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে আপনারা আরও চার বছর অপেক্ষা করতেন, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘সমগ্র বাংলাদেশে ঐকমত্য কমিশন বাংলাদেশ সংস্কারের জন্য আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে। সেই সংস্কার কমিশনে জাতীয় নাগরিক পার্টিও অংশগ্রহণ করেছে। আমরা সেখানে বলেছি গণঅভ্যুত্থানের পরে সামনে যে নির্বাচন আসছে সেই নির্বাচনে মৌলিক সংস্কার ও বিচারের মাধ্যমে আমরা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই। কারণ, বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধান গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি।’
এ সময় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব লুৎফর রহমান ও কেন্দ্রীয় সদস্য মসিউর রহমান শুভ।
তাসনিম জারা বলেন, যে ব্যবস্থার কারণে বিগত বছরগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনী নাগরিকদের গুম করেছে, খুন করেছে সেই রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তন করতেই হবে। আমরা আর ওই ব্যবস্থায় ফেরত যাব না- যেখানে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা থাকবে।
এর আগে নাহিদ ইসলাম স্থানীয় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, হরিজন পল্লি পরিদর্শন এবং একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।