সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকা থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণ সাদা খনিজ পাথরের এক অংশ ঢাকার ডেমরার সারুলিয়ায় উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ভোলাগঞ্জ এলাকা থেকে প্রায় ২ লাখ ঘনফুট সাদা পাথর অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা। একই সময়ে প্রায় ৬ লাখ ঘনফুট বালুও লুট হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ২৪০ কোটি টাকা। স্থানীয় দয়ার বাজার, কলাবাড়ি ও ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর ঘাট থেকে এসব পাথর সংগ্রহ করে বিভিন্ন ক্রাশার মেশিনে পাঠানো হতো।
অবৈধ উত্তোলন রোধে র্যাব-১১, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। সারুলিয়ায় অভিযানকালে অন্তত ৪০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে এইচএম সাজ্জাদ বলেন, ‘লুট হওয়া পাথরগুলো কোথায় আনলোড করা হয় তা জানার জন্য গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করি। এখানে কয়েকটি গদিতে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর আমরা দেখতে পাই। একদিকে পাথর আনলোড করা হচ্ছিলো, অন্যদিকে ক্রাশার মেশিনে ভেঙে ফেলা হচ্ছিলো, যাতে পাথরগুলো ভোলাগঞ্জের তা বোঝা না যায়।’

এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী বৃহস্পতিবার প্রায় ৩৫ হাজার ঘনফুট সাদা পাথর জব্দ করেছে। স্থানীয়রা জানান, ভোলাগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে ধলাই নদের তীরের প্রায় ১৫ একর এলাকায় সাদা পাথরের স্তূপ ছিল, যা একসময় জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রকাশ্যে নির্বিচারে লুট হয়েছে এই পাথর। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় শত শত নৌকা দিয়ে চলে লুটপাট। জেলা প্রশাসন জানায়, গত এক সপ্তাহে এলাকায় প্রায় ৮০ শতাংশ সাদা পাথর তুলে নেওয়া হয়েছে, যার মূল্য কয়েক’শ কোটি টাকা।
স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, শুধু পাথরই নয়, ধলাই নদীর তীরের বালু ও মাটিও খুঁড়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সাদাপাথর অঞ্চল একেবারে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে।