বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গত আট মাসে আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করতে কাজ করেছি। এর আগে কখনও এত অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি।’
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ সফররত চীনা বিনিয়োগকারীদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ ঘোষণা দেন অধ্যাপক ইউনূস। দলটি ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫’-এ অংশ নিতে বর্তমানে ঢাকায় রয়েছে।
বৈঠকে ড. ইউনূস জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রতি মাসের ১০ তারিখে চীনা ও কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রাতঃরাশ সভার আয়োজন করবে। এসব সভায় তিনি কিছুদিন পরপর নিজেও উপস্থিত থেকে বিনিয়োগকারীদের সমস্যা ও মতামত সরাসরি শুনবেন।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ দ্রুত গ্রহণ ও সমাধানের লক্ষ্যে একটি হটলাইন ও কল সেন্টার চালুর প্রস্তাবও দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘যে কোনো বিনিয়োগকারী এই নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন এবং আমরা যথাযথ জবাব দেবো।’
বৈঠকে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, টেক্সটাইল, মোবাইল টেলিকম, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিকস ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবাসহ বিভিন্ন খাতের শীর্ষস্থানীয় অন্তত ৩০ জন চীনা বিনিয়োগকারী অংশ নেন।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।
সম্প্রতি বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের এক সম্মেলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, ‘চীনা প্রেসিডেন্ট দেশটির শীর্ষ কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার আন্তরিকতা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।’
চীনা কোম্পানিগুলো চট্টগ্রামের চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও মোংলায় পরিকল্পিত অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। এসব অঞ্চলে চীন একটি সমুদ্রবন্দরও আধুনিকায়ন করবে।
প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিয়ে একাধিক কোম্পানি বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার উৎপাদন ও অপারেশন হাবে রূপান্তরের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি প্রস্তুত বাজার রয়েছে, এখান থেকে নেপাল ও ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোতেও সহজে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব।’
এছাড়া, বৈদ্যুতিক যানবাহন, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি, উইন্ড টারবাইন ও অফশোর সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির খাতেও বড় ধরনের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে কিছু চীনা কোম্পানি।
এর আগে মঙ্গলবারই (৮ এপ্রিল) দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েক ডজন বিনিয়োগকারীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।