২৪ আন্ডার পার! হ্যাঁ, চোখ কচলালেও ভুল দেখছেন না। সাত্তার মেটাল বিপিজিএ ওপেন ২০২৫-এ এমন বিস্ময়কর পারফরম্যান্স করে দেশীয় গলফে ফের আলো ছড়ালেন মো. জামাল হোসেন। একেবারে শুরু থেকেই যেভাবে ছন্দে ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল—এই টুর্নামেন্টে কেউই তাকে থামাতে পারবে না।
তিন দিনব্যাপী এই টুর্নামেন্টের শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। তবে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির কারণে একদিন পেছানো হয় সূচি। এরপর আর্দ্রতায় ভরা রোদাচ্ছন্ন আকাশের নিচে মাঠে গড়ায় খেলা।
শেষ দিনের শুরুতেই ১৪ আন্ডার পার স্কোর নিয়ে লিডে ছিলেন জামাল। খুব কাছে ছিলেন বাদল হোসেন, যিনি ছিলেন ১২ আন্ডারে। কিন্তু মাঠের আবহাওয়ার মতোই ম্যাচের মাঝপথে সব ধোঁয়াশা কেটে গেল। জামাল তখন ১৭ আন্ডারে, আর বাকিরা অনেক পেছনে।
শেষ পর্যন্ত ২৪ আন্ডার স্কোর করে সকলকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হন ৩৯ বছর বয়সী এই তারকা। বাদল দ্বিতীয় হন ১৩ আন্ডারে। তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে ছিলেন আকবর হোসেন ও মো. রাজু (১০ আন্ডার)। পঞ্চম স্থান দখল করেন মো. সোলায়েমান (৭ আন্ডার)।
টুর্নামেন্ট শেষে বিজয়ের অনুভূতি জানিয়ে জামাল বলেন,’আজকের আবহাওয়া ও গরম খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। তারপরও ভালো খেলতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিপিজিএ যেভাবে ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে, তাতে গল্ফের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আমি চাচ্ছি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেকে আরও মেলে ধরতে। আগামী মাসে ভারতের একটি টুর্নামেন্টে খেলার চেষ্টা করছি। লক্ষ্য—এশিয়ান ট্যুর ও ইউরোপীয়ান ট্যুরে খেলা।’
এই জয়ের মাধ্যমে কেবল নিজের নামই উজ্জ্বল করেননি জামাল, দেশীয় গলফের মানও আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিয়েছেন।
বিপিজিএ সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদ রাজ্জাক বলেন, ‘২৪ আন্ডার স্কোর শুধুই এক নম্বর নয়, এটা আন্তর্জাতিক মানের প্রতীক। জামালের মধ্যে বিশ্বমঞ্চে দেশকে তুলে ধরার সম্ভাবনা রয়েছে।’
৮৮ জন গলফার অংশ নেন এবারের আসরে, যাদের মধ্যে ৭৭ জন পেশাদার ও ১১ জন ছিলেন অপেশাদার। অপেশাদারদের মধ্যে মো. আবু সিদ্দিক ৫ আন্ডার পার স্কোর করে শীর্ষে থাকেন।
প্রাইজ-গিভিং সেরেমনিতে বিপিজিএ প্রেসিডেন্ট জানান, সেপ্টেম্বরেই আয়োজন করা হবে ইন্টার-ক্লাব গল্ফ টুর্নামেন্ট, যেখানে অংশগ্রহণ করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলো।
আর এই ধারাবাহিকতায় হয়তো একদিন আমরা দেখব, বিশ্ব গলফ মানচিত্রে এক লাল-সবুজ পতাকা ওড়াচ্ছেন মো. জামাল হোসেন।