প্রচলিত আইনেই মডেল ও সাবেক ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। মেঘনাকে আটকের ঘটানাটি ‘বেআইনি কোনো পদক্ষেপ নয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মেঘনাকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ‘এই (বিশেষ ক্ষমতা আইন) আইন তো ব্যবহার হচ্ছে। এই একটি ক্ষেত্রে আইনটি ব্যবহার হয়েছে তাও তো নয়। বেআইনি কাজ তো না।’
তিনি বলেন, ‘মেঘনার বিষয়ে একটি অভিযোগ এসেছে, সেটির তদন্ত হচ্ছে। বিষয়টি হাইকোর্টে গেছে, তাই এটি একটি বিচারাধীন বিষয়। এ কারণে এই বিষয়ে কথা বলা এখন ঠিক হবে না।’
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারীর দাবি, মডেল মেঘনার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো ধরনের বেআইনি আচরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টে এটা নিয়ে বিচার চাচ্ছে, সেটারও আমরা জবাব দেব। আপনারা সব তথ্য পাবেন। অগ্রিম তথ্য নিয়ে তো আলোচনা করা ঠিক না।’
এর আগে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ‘মেঘনাকে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি’ বলে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, ‘যিনি এ মন্তব্য করেছেন প্রশ্নটা উনাকে করবেন। আইন উপদেষ্টা কোন পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন সেটা তো আমি জানি না। বিষয়টা তাকেই জিজ্ঞেস করতে হবে। আর উনি তো আমাদেরকে বলেন নাই যে, আমি এই কারণে বলেছি।’
বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনার আটকাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত রোববার (১৩ এপ্রিল) হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তার বাবা।
গত বুধবার (১০ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করে ডিবি পুলিশ। আটক হওয়ার আগে তিনি ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, পুলিশ পরিচয়ধারীরা তার বাসার দরজা ভাঙার চেষ্টা করছে। ১২ মিনিটেরও বেশি সময় চলা সেই লাইভ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় এবং পরে তার ফেসবুক আইডি থেকে তা মুছে দেওয়া হয়, যদিও এরই মধ্যে ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ডিবি পুলিশ। এরপর আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ (১) ধারা অনুযায়ী তাকে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মেঘনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্ন, ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অবনতি ঘটানোর চেষ্টা এবং দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানায় ডিবি।
মেঘনাকে গ্রেপ্তার ও এক মাসের আটকাদেশে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় নেটিজেনদের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে।