খাগড়াছড়িতে সেনা অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে ‘অস্ত্রধারী’ এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম কংচাইঞো মারমা (৩১)।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, নিহত কংচাইঞো দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়ি এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিলেন।
শুক্রবার সকালে খাগড়াছড়ি শহরের শান্তিনগর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত কংচাইঞোর বাড়ি মহালছড়ি এলাকায়। তবে গত দেড় বছর ধরে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরের শান্তিনগর এলাকায় বাস করতেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, সকালে মানিকছড়ির গাড়িটানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ কংচাইঞো মারমাকে ধরতে শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
বিবৃতিতে আইএসপিআর আরও বলেছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কংচাইঞো মারমা একটি তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে এবং পালানোর কোনও পথ না পেয়ে এক পর্যায়ে সে ছাদ থেকে লাফ দেয়।’
আহত অবস্থায় কংচাইঞো মারমাকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ধারণা করা হয়, ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি ৯ মিমি পিস্তল, পাঁচটি এলজি, ২১টি কার্টুজ এবং ১৮টি পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে মরদেহের ময়নাতদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’
আইএসপিআর বলছে, ‘কংচাইঞো মারমা দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়ি এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল।’
তার বিরুদ্ধে একাধিক অপহরণের অভিযোগ রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক দিপা ত্রিপুরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার আগেই কংচাইঞো মারমার মৃত্যু হয়েছিল। তার শরীরে উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যাওয়ার মতো আঘাতের চিহ্ন ছিল। শরীরে কোনও গুলির চিহ্ন ছিল না বলেও জানান এই চিকিৎসক।
যে ভবন থেকে পড়ে কংচাইঞোর মৃত্যু হয়েছে সেই ভবনটির মালিক সুজিত দে। তিনি বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ওই যুবক নিচতলায় ভাড়া থাকতেন। ভাড়া নেওয়ার সময় জানিয়েছিলেন তিনি একটি ইস্পাত কোম্পানিতে কাজ করেন।’