জাতীয় পার্টির (জাপা) নতুন মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দল থেকে যাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে তাদের কাউকে আর দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। সে যেই হোক।
তিনি বলেন, ‘তরুণদের নিয়ে নতুন করে দল সাজানো হবে। তাদের সঙ্গে নিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করবে এরশাদের গড়া এই দল।’
মহাসচিব পদে নিযুক্ত হওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় টাইমস অব বাংলাদেশকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টিও একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এই দলের জেলা, উপজেলা ও মহানগরের সভায় কয়েকজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে মুজিবুল হক চুন্নুর নামও রয়েছে। তৃণমূলের মতামত ও রেজুলেশন প্রেসিডিয়াম সভায় আলোচনার পর তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
তৃণমূলের সিদ্ধান্ত গুরুত্ব দিয়ে তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় পার্টি জনগেণের পক্ষে রাজনীতি করবে বলেও জানান জাতীয় পার্টির এই নেতা।
গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম হায়দার বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে নিয়ে অনেকেই খেলেছেন। নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন।’
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অনেক স্বপ্ন নিয়ে দলটি গঠন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জীবদ্দশায় পার্টি চেয়ারম্যানকে অনেকে ব্যবহার করেছেন। তার ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করেছেন। এরশাদের মৃত্যুর পর সুবিধাবাদী চক্রটি আরো তৎপর হয়েছিলেন। তারা জিএম কাদেরের নেতৃত্বকে বিতর্কিত করতে অনেক কিছু করেছেন। দল ভাঙার ষড়যন্ত্র ও দলকে খণ্ড খণ্ড করার চেষ্টা করেছেন অনেকে এবং তারা এখনো তৎপর।
জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এরশাদের উপদেষ্টা শামীম বলেন, ‘তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলের ভেতরকার ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরেছেন। জড়িত অনেককে চিহ্নিত করেছেন তারা। এরপর সভা করে ওইসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতে রেজুলেশন করে প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। তৃণমূলের সিদ্ধান্তকে সম্নান জানিয়েছেন পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের।’
জনগণের কল্যাণে কাজ করতে জাতীয় পার্টি গ্রাম-গঞ্জে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ছুটে যাবে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তরুণ এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না। সব ধরনের ষড়যন্ত্র তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিহত করা হবে।’
দল যাদেরকে বহিষ্কার করেছে তারা জাতীয় পার্টি নিয়ে কথা বলার অধিকার হারিয়েছেন। তারা দল নিয়ে কোনো কিছু করলে সেটা হবে ষড়যন্ত্র। আর ষড়যন্ত্রকারীরা কখনো সফল হন না, যোগ করেন তিনি।
জাতীয় পার্টিতে এরশাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন, প্রতিষ্ঠাকালে ছিলেন তাদের মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মসিউর রহমান রাঙ্গা, শফিকুল ইসলাম সেন্টুসহ অনেকে গুরুত্ব হারিয়েছেন। অনেকে পদ হারিয়ে বহিষ্কারও হয়েছেন। তাদেরকে নিয়ে দলে এখনো টানাপোড়েন চলছে। এরই মধ্যে দলের নতুন মহাসচিব হিসেবে ব্যারিস্টার শামীমকে নিয়োগ দেওয়া হলো।