রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। তিনি বলেন, ‘অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগকে যুক্ত করার কারণে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছিল। বিচার বিভাগকে এখানে যুক্ত করার কারণে কেবল বিচার বিভাগ দলীয়করণ হয়নি, পুরো বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার মধ্যে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছিল।‘
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
রাষ্ট্রপতিকে শেষ বিকল্প হিসেবে ত্রয়োদশ সংশোধনীতে রাখা হয়েছিল। এর ব্যবহারও তারা দেখেছেন। সে ব্যবহারে রাষ্ট্রপ্রধানকেও একটা বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে আরেকটা গুরুতর সংকট তৈরি করা হয়। এ কারণে তারা তাদের দিক থেকে বলেছেন, রাষ্ট্রপতি ও বিচার বিভাগ—এই দুই প্রতিষ্ঠানকে বাইরে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের জায়গায় যাওয়া দরকার।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার মূলত নির্বাচন পরিচালনা করবে বলে উল্লেখ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী।
তিনি বলেন, ‘আর এই নির্বাচনব্যবস্থাটা রাজনৈতিক বিষয়। কাজেই এই রাজনৈতিক বিষয়ের ফয়সালা রাজনৈতিক প্রতিনিধি, অর্থাৎ জনপ্রতিনিধিদের হাতে থাকা দরকার। নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ গঠিত হলে সেখানকার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, সে বিষয়টি তারা নির্ধারণ করবে।’
এখন একটি সাধারণ ঐকমত্য তৈরি হয়েছে যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সংস্কার প্রয়োজন। বেশির ভাগ দল একমত যে প্রধান বিচারপতিকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া উচিত, যোগ করেন জোনায়েদ সাকি।
তিনি আরও বলেন, ‘মতানৈক্য রয়েছে এই নিয়ে যে জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকেই সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে, নাকি আপিল বিভাগের দুজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতির মধ্যে একজনকে বাছাই করার সুযোগ থাকবে রাষ্ট্রপতির।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, রাষ্ট্রপতি যেন আপিল বিভাগের দুজন শীর্ষস্থানীয় বিচারপতির মধ্য থেকে যেকোনো একজনকে নিয়োগের এখতিয়ার পান। এটি রাষ্ট্রের ক্ষমতার কাঠামোয় ভারসাম্য নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।’
১৫ বছরে যেভাবে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে, সেই বাস্তবতায় প্রস্তাবটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যোগ করেন তিনি।