ঝিনাইদহে প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

টাইমস ন্যাশনাল
3 Min Read
আহত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান। ছবি : টাইমস

ঝিনাইদহে ব্যক্তিগত ক্ষোভের জেরে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে।

রোববার সকালে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দরি বিন্নী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গুরুতর আহত প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

অভিযুক্ত দুই ভাই হলেন আনোয়ার হোসেন ও বাবুল। এদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন হরিণাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক। তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক সদস্যও।

আহত মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার দিন সকালে তিনি স্কুলে যাচ্ছিলেন। রাস্তা থেকে স্কুলের মাঠে প্রবেশ করার সময় সাবেক মেম্বার আনোয়ার ও তার ভাই বাবুল পথরোধ করে। এরপর তারা লোহার রড ও লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। এরপর স্কুলের শিক্ষকরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে  হাসপাতালে ভর্তি করে।

কেন মারধর করা হয়েছে তা জানতে চাইলে এই প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আনোয়ার মেম্বারের মেয়ে উর্মি এই বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিল। বিদ্যালয় থেকে তিনবার তার নাম পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো কারণে তার মেয়েকে সভাপতি করা হয়নি, হয়েছে আরেকজন। এই কারণে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত।’

গত কয়েকদিন ধরেই আনোয়ার মেম্বার ও বাবুল তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করছিলেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘তিনদিন আগে নতুন অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়েছে। আনোয়ার মেম্বারের মেয়ে ঊর্মিকে এই বিদ্যালয়ের সভাপতি বানানোর চেষ্টা করেন আনোয়ার তার ভাই বাবুল। তিনবার তার নাম পাঠালেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তা যেকোনো কারণে বাতিল হয়। মূলত সেই কারণেই হেড মাস্টারের ওপর তাদের ক্ষোভ।’

‘সেই ক্ষোভ থেকেই তার ওপর হামলা চালিয়েছে। হেড মাস্টার আমাকে জানিয়েছিলেন যে বাবুল কয়েকদিন ধরে ফোন করে খাওয়া-দাওয়া করার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করছে।‘

বাবুলের বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক অভিযোগ উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন শালিস দরবার করে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অনেক অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।’

তবে মারপিটের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন আনোয়ার হোসেন।

তার দাবি, পাওনা টাকা নিয়ে মিজানুর রহমানের সঙ্গে তার ভাইয়ের ঝামেলা হয়েছে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সমিতির কিস্তির জন্য মিজানুর রহমান আমার কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে দুই লাখ টাকা নিয়েছে। সেই টাকা ফেরত দিচ্ছে না। আজকে সেই টাকা ফেরত চাওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে আমার ভাই বাবুলের সঙ্গে তার ঝামেলা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এমএ রউফ খান বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *